প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতির নির্দেশনা, যত প্রস্তুতি নিল সরকার

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দিয়ে নিরাপদে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকাগ্রহণ কার্যক্রম শেষ করতে হবে। কী কারণে কারা টিকা নিতে পারছেন না- তাও জানাতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছি। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বিদ্যালয়ে সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি পেলেই আমরা সে ব্যবস্থা নিতে পারবো।’

বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি হিসেবে সর্বশেষ গত ২৬ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের টিকা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। জারি করা অফিস আদেশে বলা হয়, আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মীদের টিকা নিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকা নেওয়া শেষ করার পর করোনা আপডেট সফটওয়্যারে এন্ট্রি নিশ্চিত করতে হবে। আর যারা টিকা নিচ্ছেন তা তাদের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে পাঠাতে হবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতির নির্দেশনা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে গত ২১ আগস্ট বৈঠক করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একগুচ্ছ নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে— সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে হবে। ওয়ার্কশিট বিতরণ শতভাগ নিশ্চিতকরণ ও যাচাই করতে হবে। শিখন ঘাটতির অবস্থা ও ফিডব্যাক নিতে হবে। বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। হোম ভিজিট যাচাই করা। শিক্ষার্থী প্রোফাইল শতভাগ হয়েছে কিনা তা দেখা। দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় নির্ধারণ করা। স্যাম্পল হিসেবে শিক্ষার্থীর বাড়ি যাওয়া এবং শিক্ষার্থী যোগাযোগ রেজিস্ট্রার যাচাই করা।

এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক দ্রুত ঠিক করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে যৌথসভা করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পাঁচ দফার মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করোনার সংক্রমণের ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে কোনও একটি সংখ্যা বিবেচনা করা যায় কিনা সে বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ চাওয়া হবে।

যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘স্কুল রি-ওপেনিং প্ল্যান’ করে রেখেছে- তারপরও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে আলোচনা করে এই প্ল্যান আগামী সাত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তার জন্য প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে মনিটরিং সেল গঠন করবে এবং প্রতিদিন প্রতিবেদন তৈরি করবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে মনিটরিং প্রতিবেদন তৈরি করার একটি গাইডলাইন তৈরি করা হবে।

১৫ অক্টোবরের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর আবার যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে। সেদিনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //