মুজিববর্ষে উপহার পাচ্ছেন ১২ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী

অবসরপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত ১২ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে মুজিববর্ষে উপহার হিসেবে তাদের পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অবসর ও কল্যাণ বোর্ড। এজন্য সরকারের কাছে ৮০৪ কোটি টাকা চেয়েছে বোর্ড। 

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালের ১ জুলাই যারা আবেদন করেছেন তারা এখনো টাকা পাননি। অর্থাৎ অবসরে যাওয়ার প্রায় তিন বছর পরও শিক্ষকরাও তাদের পাওনা বুঝে পাননি। 

সে সময় থেকে চলতি বছরের ২১ মার্চ পর্যন্ত নিষ্পত্তি করার জন্য আবেদন জমা পড়েছে ২৫ হাজার ৩০৯টি। যা পরিশোধে প্রয়োজন দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

চাকরি জীবনে জমানো টাকা অবসরে যাওয়ার পর সময় মতো পাচ্ছেন না বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। অবসর বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় অনেক শিক্ষক তার জমানো টাকা না পেয়েই মারা গেছেন। এই সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন অবসর ও কল্যাণ বোর্ডের শিক্ষকরা।

শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ছয় শতাংশ হারে যে টাকা কর্তন করা হয় তা দিয়ে বছরে তহবিলে জমা হয় ৭২০ কোটি টাকা। ভাতা দেয়ার জন্য প্রয়োজন হয় হাজার কোটি টাকা। যেখানে ঘাটতি থাকে ২৮০ কোটি টাকা। 

মুজিববর্ষে ১২ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর পাওনা পরিশোধ করতে চায় বোর্ড। এজন্য দরকার এক হাজার ২৮৪ কোটি টাকা। মুজিববর্ষের বাকি আট মাসে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ছয় শতাংশ করে কর্তনের মাধ্যমে আদায় হবে ৪৮০ কোটি টাকা। ঘাটতি থাকবে ৮০৪ কোটি টাকা। আর মুজিববর্ষের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় এ টাকা বিশেষ বরাদ্দ চায় অবসর সুবিধা বোর্ড। সেজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছেন বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার মুজিববর্ষে সবাইকে কিছু না কিছু উপহার দিচ্ছে। আমরা চাই সারাজীবন আলোর দ্বীপ জ্বালানো এসব শিক্ষকদের জন্য কিছু উপহার নিয়ে আসতে। মুজিববর্ষে ১২ হাজার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীকে উপহার হিসেবে চেক বিতরণ করতে চাই। এজন্য ৮০৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতনরা এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন।’  

শিক্ষকদের এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে এর আগেও অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়। যা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। এর মধ্যে গত কয়েক বছরে এই সংকট কিছুটা কমিয়ে এনেছে বর্তমান সরকার। 

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫০০ কোটি টাকা সিড দেয় সরকার। সেই টাকাসহ আরো বিশেষ বরাদ্দ মিলে ১ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা পাওয়ার পর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অপেক্ষার সময় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন আবেদন করার পর দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়।

সূত্র জানায়, বর্তমানে অবসর বোর্ডে জনবল সংকট থাকায় শিক্ষকদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। এজন্য ৭১টি পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। অবসর বোর্ডের শুরুতে সিড মানি হিসেবে সরকারের অনুদানের ৮৯ কোটি টাকার লভ্যাংশ থেকে এ ব্যয় মেটানো হবে। 

সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে অবসর বোর্ডের স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনসহ অফিস খরচ বাবদ বছরে এক কোটি ব্যয় হয়। আবার সিড মানির লভ্যাংশের চার কোটি টাকা মূলধনের সাথে যোগ হয়। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //