মাদ্রাসার ২ ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযুক্ত শিক্ষক আটক

রাঙ্গামাটির লংগদুতে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই শিশু শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে একটি মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের রাজনগর মুহাম্মদিয়া জামিয়া শরিফ নামের এক মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে।

গত শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত আটকের পর শনিবার লংগদু থানায় মামলা হয়েছে। ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরিফ মাদ্রাসাটির পৃষ্ঠপোষকতা করে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মো. ফারুক আহমেদ (৭০)। ফারুক মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ে শিশুদের পড়ান কয়েক বছর ধরে। এর আগে তিনি পুলিশে কর্মরত ছিলেন বলে জানায় এলাকাবাসী। এছাড়া গুলশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদে আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

দুই শিশুর অভিভাবকরা জানান, শিক্ষক ফারুক বাগান থেকে বাঁশ আনবে বলে গত বুধবার শিশু শিক্ষার্থী আমার ভাগিনাকে বাঁশ বাগানে নিয়ে যায়। বাগানের টং ঘরে শিশুটিকে বলাৎকার করে এবং কাউকে বলতে নিষেধ করে ৫০ টাকা চকলেট খেতে দেয়। এরপর শুক্রবার আমার শিশুপুত্রকেও বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বাঁশ বাগানের একই স্থানে গিয়ে বলাৎকার করেন। শিশুটি বাড়িতে ফিরে অসুস্থবোধ করলে পুরো ঘটনা জানতে পারি আমরা। এরপর আমরা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে জানালে তারা শুক্রবার রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে। এরপর শনিবার সকালে আমরা থানায় মামলা করি। আমরা এই ভণ্ড শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই।

এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও একই মাদ্রাসার অন্য কয়েকজন ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠলে এলাকার মানুষজন স্থানীয়ভাবে সমাধান করে দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন সকলের অগোচরে তিনি এসব অপকর্মে লিপ্ত আছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়াদের।

ওই মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা হাফিজ বলেন, গতকাল শুক্রবার আমাদের মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। ফারুক স্যার আমাকে কল দিয়েছিল, তিনি বাগান থেকে কিছু বাঁশ আনবেন। সেই সুবাদে মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে যান। পরবর্তীতে লোক মুখে শুনি তিনি সেই ছাত্রদের বলাৎকার করেছেন। যদি এর সত্যতা পাই তাহলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মাওলা বলেন, শিশুদের পরিবার আমার কাছে আসলে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসি। দুইপক্ষের কথা শুনে আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে সহযোগিতা করি।

গুলশাখালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওলি উল্লাহ জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে অভিযুক্ত ফারুক আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফাঁড়িতে নিয়ে আসি। পরে তাকে লংগদু থানায় হস্তান্তর করি।

লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ জানান, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযোগ আমলে নিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //