পাবনায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহতের ঘটনায় আটক ৩

পাবনা সুজানগর উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণায় হট্টগোল নিয়ে পুলিশের সঙ্গে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজন গুলিবিদ্ধসহ তিনজন আহত হয়েছেন। 

গুলিবিদ্ধরা হলেন- বাদশা (৩৫) ও মতিন (৪০)। অপর আহত ব্যক্তি হলেন আব্দুল আউয়াল (৪৮)। তাদের সবাইকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ভাঁয়না কালির মোড় নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দেশীয় অস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল ওহাব (প্রতীক মোটরসাইকেল), অন্যজন হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন (প্রতীক আনারস)।

এদিন বিকেলে শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকরা ভায়না কালির মোড়ে নির্বাচনি প্রচারণায় যায়। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল ওহাবের সমর্থক ও ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের ভাতিজা আব্দুল আওয়ালকে কথা কাটাকাটির জেরে কিল-ঘুষি মারে। তখন ভায়না ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন শাহীন চেয়ারম্যানের লোকজনকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তারা আবার লোকজন নিয়ে ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয় পুলিশ। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে শাহীন চেয়ারম্যানের লোকজনের কথা কাটাকাটি থেকে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হয়। পরে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এসময় বাদশা ও মতিন নামের দুইজন পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। আর মারপিটে আহত হন আওয়াল। অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে আহত তিনজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দুইজন শাহিনের সমর্থক। আর আহত আউয়াল ওয়াহাবের সমর্থক।

এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে হট্টগোল নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের লোকজন ভায়না ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি ঘেরাও করলে পুলিশ সেখানে যায়। কিন্তু পুলিশের ওপর চড়াও হওয়াটা দুঃখজনক। পুলিশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওহাব অভিযোগ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের লোকজন সারা উপজেলায় আমার লোকজনের উপর হামলা চালাচ্ছে। বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনা তারই অংশ। তারা পুলিশকেও মানছে না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, আমার এক সমর্থককে মারধর করে ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন। এ নিয়ে আমার লোকজন জড়ো হলে আমিন চেয়ারম্যানের লোকজন গুলি করে। পুলিশ গুলি করেনি। এ ঘটনায় তার সমর্থক কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনাস্থলে ঘুরে দেখা যায় ওই এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। সুজানগরের সাধারণ ভোটারদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছেন। তবে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেই চলেছেন। সাধারণ ভোটাররা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু ভোট আশা করছেন। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //