পটুয়াখালীতে ভেসে আসা টর্পেডো বেঁধে রেখেছেন গ্রামবাসীরা

বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে হঠাৎই জোয়ারের পানিতে ভেসে আসে যুদ্ধ জাহাজ ধ্বংসকারী একটি টর্পেডো। 

গতকাল রবিবার (২৯ এপ্রিল) সকালে রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের মীরকান্দা গ্রাম সংলগ্ন ভাঙা খালে সেটিকে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

এই এলাকায় বঙ্গোপসাগরের সাথে সরাসরি সংযোগ নিজকাটা খালের। খালের জোয়ারের পানির সাথে এটি ভেসে আসার খবর পেয়ে শত শত স্থানীয় মানুষ এটি দেখতে ভিড় করেন ওই খালের পাশে। তাদের কারও কারও মধ্যে আতঙ্ক দেখা যায়। কেউ কেউ জানতে পারেন এটি যুদ্ধ জাহাজ ধ্বংসকারী টর্পেডো। পরে স্থানীয় কিছু মানুষ খালে নেমে দড়ি দিয়ে টর্পেডো সদৃশ ওই বস্তুটিকে ভাসমান অবস্থায় দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন একটি খুঁটির সাথে।

বাসিন্দারা জানান, এটা যেন লোকালয়ে ঢুকে ক্ষতি করতে না পারে তাই তারা এটিকে নিরাপদ জায়গায় বেঁধে রেখেছেন।

খবর পেয়ে পুলিশও আসে ঘটনাস্থলে। তারা বস্তুটিকে বিস্ফোরক ও ক্ষতিকারক মনে করে সরিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দাদের।

রাঙ্গাবালী থানার ওসি হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের বিশেষজ্ঞ দল এটাকে টর্পেডো বলে নিশ্চিত করেছে। এটাকে হয়তো প্র্যাকটিসের জন্য পানিতে নামানো হয়েছিল। তবে এটি কোথা থেকে ভেসে এসেছিল সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।

লাল সাদা রঙের এই টর্পেডোটির দৈর্ঘ্য আনুমানিক ২৫ ফুটের মতো বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয় খালে ঢুকে পড়ার পর সেটিকে গাছের সাথে বেঁধে আটকে রেখেছে। পরবর্তীতে আমরা নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডকে জানিয়েছি।

টর্পেডোর কাজ কী?

টর্পেডো হচ্ছে একধরণের সেলফ প্রোপেলড মিসাইল, যেটি পানির নিচ দিয়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এর ভেতরে সমুদ্রযান ধ্বংসের জন্য বিস্ফোরক ওয়ারহেড যুক্ত থাকে। লক্ষ্যবস্তুর সাথে সংঘর্ষ হলে অথবা কাছাকাছি আসলে এটি বিস্ফোরিত হয়।

যে কোনও বড় জাহাজ ধ্বংস করে দেওয়ার কাজে টর্পেডো ব্যবহার হয়। সাধারণত বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী এটি ব্যবহার করে থাকে।

আগে এটিকে অটোমোটিভ, অটোমোবাইল বা ফিশ টর্পেডো বলা হতো। এটি "ফিশ" বা মাছ নামেও পরিচিত ছিল।

"টর্পেডো" নামটি মূলত বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের জন্য প্রযোজ্য ছিল। যার অধিকাংশই বর্তমানে "মাইন" নামে পরিচিত।

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে পাওয়া এই এই টর্পেডোটি সম্পর্কে কোস্টগার্ড রাঙ্গাবালী আউটপোস্টের কন্টিনজেন্ট মি. আজাদ গণমাধ্যমকে জানান, টর্পেডো অনেক ভারী থাকে। সাধারণত এটা পানির নিচে থাকে। যেহেতু এটি ভেসে আসছে, সুতরাং ব্যবহার হয়েছে কিংবা ড্যামেজ হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।

তবে এর ভেতরে কোনও বাতাস থাকলে তাহলে বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও তিনি জানান।

বরিশালের শেরে বাংলা নৌবাহিনী ঘাঁটির বিশেষজ্ঞ দলের একজন সদস্য জানান, নৌবাহিনীর দলটি যখন ঘটনাস্থলে গিয়েছেন তখন খালে ভাটি চলছিলো।

এ কারণে তারা কোনও ধরনের তৎপরতা চালাতে পারেননি। তবে নদী ও খালে জোয়ার শুরুর পর উদ্ধার তৎপরতা চালানোর কথা বলেন তিনি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //