পাবনার বেড়ায় প্রাথমিক শিক্ষক বদলিতে তথ্য গোপনের অভিযোগ

তথ্য গোপন করে বদলি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনার বেড়া উপজেলার মাছখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আরেক সহকারী শিক্ষক লিপিকা রানী।

গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। এদিকে প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, লিপিকা রানী পাবনার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তার স্থায়ী ঠিকানার কাছাকাছি ২৮নং নাটিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির জন্য গত ৩০ মার্চ শিক্ষক বদলির অনলাইন পোর্টালে বিধি মোতাবেক আবেদন করেন।

তবে গত ১৬ এপ্রিল সকালে অনলাইন পোর্টাল থেকে তিনি জানতে পারেন ওই স্কুলের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে একই উপজেলার নাকালিয়ার মাছখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনকে। ১৮ এপ্রিল তাকে বদলি করা স্কুলে যোগদানের আদেশও দেওয়া হয়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বদলির জন্য সাবিনার মোট স্কোর হয়েছে ৩৮। এর মধ্যে স্থায়ী ঠিকানা থেকে বর্তমান কর্মস্থলের দূরত্বের জন্য ৩ স্কোর পেয়েছেন। যা তিনি মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে জালিয়াতি করে নিয়েছেন। প্রকৃত সত্য হলো তার স্থায়ী ঠিকানা থেকে বর্তমান কর্মস্থলের (মাছখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) দূরত্ব মাত্র কোয়ার্টার কিলোমিটার।

ভুক্তভোগী লিপিকা রানী বলেন, ‘আমাকে ৩৫ স্কোর দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রাখা হয়েছে। অথচ আমার স্থায়ী ঠিকানা থেকে বর্তমান কর্মস্থলের (ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) দূরত্ব এক কিলোমিটারের বেশি। এমন দূরত্বের কারণে এই ক্যাটাগরিতে আমাকে শূন্য স্কোর দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচিত শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন আমার চেয়েও কম দূরত্বে থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বেশি দূরত্বে কর্মস্থল দেখিয়ে ৩ স্কোর বা নম্বর বেশি নিয়েছেন। যা একরকম দুর্নীতি। এতে আমি বদলির ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।’

এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্ত করে অনিয়মের মাধ্যমে বদলির জন্য নির্বাচিত সহকারী শিক্ষক সাবিনার বদলি বাতিল এবং নিয়মানুযায়ী তাকে (লিপিকা রানী) নাটিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান লিপিকা রানী।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে বেড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা কফিল উদ্দিন সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। আর স্থায়ী ঠিকানা থেকে কর্মস্থলের দূরত্বের যে অভিযোগ করা হয়েছিল সেটির প্রমাণ পাওয়া গেছে।’

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো অনিয়মের সাথে জড়িত নই। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমাকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //