ভিজিএফের চালের ভাগ না পেয়ে ইউপি সদস্যকে পেটাল ছাত্রলীগ নেতা

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুস্থ ও হত দরিদ্রদের নামে সরকারি বরাদ্দ ভিজিএফের চালের স্লিপের ভাগ না পেয়ে এরশাদুল হক নামে এক ইউপি সদস্যকে প্রকাশ্যে পেটালেন সুমন চন্দ্র রায় ও আবুল কালাম আজাদ নামে স্থানীয় দুই ছাত্রলীগ নেতা। এসময় তারা ওই ইউপি সদস্যের এক চোখে মোটরসাইকেলের চাবি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয়রা আহত ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

গতকাল মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বিকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দনগর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত সুমন চন্দ্র রায় ওই মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও আবুল কালাম আজাদ সাধারণ সম্পাদক। আহত এরশাদুল  ওই ইউনিয়নের ৮নং সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

এদিকে এ ঘটনার বিচারের দাবিতে তাৎক্ষণিক ওই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যসহ ১২জন সদস্য ঢাকা-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় সড়কের দুই পাশে শতাধিক যান বাহন আটকা পড়ে। তবে খবর পেয়ে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন এসে ঘটনার দ্রুত তদন্ত শেষে বিচারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন  বিক্ষুব্ধ জনপ্রতিনিধিরা।

এদিকে অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করে। এসময় তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, সকাল থেকে পরিষদ চত্বরে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফ- চাল বিতরণ চলছে। এসময় মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ দলে বলে হঠাৎ পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করে পরিষদের ৮নং সদস্য এরশাদুল হককে মারধর শুরু করেন। এসময় তাদের হাতে থাকা মোটরসাইকেলের চাবি দিয়ে ওই ইউপি সদস্যকে ঘুষি দিলে তার এক চোখ মারাত্মক জখম হয়। এছাড়া ওই ইউপি সদস্যের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ইউপি সদস্যকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার বিচার চেয়েছেন তিনি।

পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য মমতাজ বেগম জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। আমরা এর বিচার না পেলে আবারও আন্দোলন করবো।

হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় আহত ইউপি সদস্য এরশাদুল হক জানান, ঈদ উপলক্ষে দুস্থ ও হত দরিদ্রদের নামে ওয়ার্ডে সরকারি বরাদ্দ ভিজিএফের চালের জন্য ১৬ স্লিপ পাই। যার হকদার গরীব মানুষ। কিন্তু ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন ও সম্পাদক আবুল কালাম ওই স্লিপের ভাগ চায়। আমি স্লিপ দিতে অস্বীকার করায় তারা আমাকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে প্রকাশ্যে মারধর করেন। আমার চোখে মারাত্মক জখম হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। এ ঘটনায় থানায় মামলা করবেন বলেও তিনি জানান।

তবে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি অভিযুক্ত সুমন চন্দ্র রায় বলেন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সাথে ইউপি সদস্য এরশাদুল হকের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ওই ইউপি সদস্যই আগে আঘাত করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন জানান, ঘটনা শোনার পর তাৎক্ষণিক ঘটনা স্থলে গিয়েছি। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারবৃন্দ সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছেন। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //