পঞ্চগড়ে পশুর হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে পশুর হাটে মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে। উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভাউলাগঞ্জ হাটের ইজারাদারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। গরু ও ছাগল বিক্রিতে মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়ে তাই ইজারাদারের উদরপূর্তি হলেও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতা। প্রতি বছর ইজারা মূল্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতার পকেট কাটার প্রতিযোগিতা।

১৪৩০ বাংলা সনে ভাউলাগঞ্জ হাটটির পরিশোধিত মোট ইজারা মূল্য ছিল ১ কোটি ১২ হাজার টাকা। প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার নির্ধারিত হাটের দিন। উপজেলার মধ্যে সব থেকে বড় হাট ভাউলাগঞ্জ হাট। উপজেলাসহ উপজেলার বাইরে থেকেও আসা পর্যাপ্ত গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয় হয় এই হাটে।

নিয়ম অনুযায়ী হাটের দৃশ্যমান স্থানে টোল চার্ট প্রদর্শন ও রশিদের মাধ্যমে টোল আদায় বাধ্যতামূলক। তবে বুধবার সরেজমিন ভাউলাগঞ্জ হাটে গিয়ে দেখা মেলে ভিন্ন চিত্রের। হাটের কোথাও টোল চার্ট প্রদর্শন করা হয়নি। গরু-ছাগল বিক্রির সময় রশিদ প্রদান করা হলেও টোলের হার উল্লেখ করা নেই। ফলে আইনের তোয়াক্কা না করে এভাবেই চলছে বছরের পর বছর শুভঙ্করের ফাঁকি।

জেলা প্রশাসন অনুমোদিত টোল হার অনুযায়ী প্রতি গরুতে শুধুমাত্র ক্রেতার কাছ থেকে ৩৫০ টাকা নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এখানে ক্রেতার কাছ থেকে ৫০০ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ২০০ টাকা এবং ছাগল প্রতি শুধুমাত্র ক্রেতার কাছ থেকে ১৩০ টাকা নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এখানে ক্রেতার কাছ থেকে ১৫০ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ১০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এতে বিপুল পরিমাণ টাকা ইজারাদারের পকেটে গেলেও সমপরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।

হাটে আসা হিরেন রায় নামে এক ক্রেতা বলেন, আগের মতো হাটে গরু-ছাগলের আমদানি হচ্ছে না। বছরে বছরে টোল বাড়ায় পার্শ্ববর্তী হাটগুলোতে যাচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।

গাজকাটি এলাকা থেকে আসা শমসের আলী বলেন, বাড়িতে পালনের জন্য একটি গাভী কিনেছি। এই বাবদ আমাকে ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে।

সাইজুদ্দিন নামে এক পাইকার বলেন, এখন অধিকাংশ পাইকার বাড়ি গিয়ে গরু-ছাগল কেনার দিকে ঝুঁকছেন। কারণ হাটগুলোতে গরু-ছাগল কিনলেই বাড়তি টোল দিতে হচ্ছে। বাড়ি থেকে কিনলে টোলের টাকা বেঁচে যায়

হাটের ইজারাদার আশরাফুল আলম এমুকে পাওয়া না যাওয়ায় কথা হয় হাটের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আজিজার রহমানের সাথে। বাড়তি টোল আদায়ের বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন, এভাবেই প্রতি বছর টোল আদায় করা হয়। সকলকে ম্যানেজ করেই আমাদের চলতে হয়। কাকে ম্যানেজ করে বাড়তি টোল আদায় করছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল আলম বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায়ের কোন সুযোগ নেই। এমনটা হয়ে থাকলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //