জিনহুয়াং আম চাষে সুরত আলীর বাজিমাৎ

ড্রাগনের পর কৃষি উদ্যোক্তা সুরত আলী এবার আম চাষে চমক দেখাচ্ছেন। তার আম বাগানে জিনহুয়াং নামের একটি বিদেশি জাতের আম গাছে সিজনে ও অফ-সিজনে আম ধরছে কয়েক বার। এবার সিজনের মুকুল রেখে দিলেও তিনি মূলত অফ-সিজনে আম উৎপাদন করতে চান। সাইজে বড় ও ভালো স্বাদের এই আম অফ-সিজনে কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রয় করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার শিবনগর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা সুরত আলী জানান, ৪ বছর আগে ভিয়েতনাম থেকে জিনহুয়াং নামের আমের এ জাতটি সংগ্রহ করে দিয়েছেন তার ভাগ্নে ডক্টর রুস্তম আলী। এরপর তিনি ওই গাছের সায়ন দিয়ে চারা তৈরি করে ৪ বিঘা জমিতে ৫০০টি চারা রোপণ করেন। গাছ থেকে গাছ ৮ ফিট ও লাইন থেকে লাইন ১২ ফিট দূরত্ব বজায় রেখে আমের চারা লাগানো হয়েছে। তার লাগানো এই চারাগুলোর বয়স প্রায় ৩ বছর।

তিনি আরো জানান, দুই বছর বয়সেই গাছে আমের মুকুল আসে। প্রথমবার মুকুল ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। এবার সিজনের মুকুল রেখে দিয়েছেন। গ্রীষ্মকাল জুড়েই গাছে মুকুল আসতে থাকবে। ফলে সিজনের আমতো পাবেনই, এছাড়া অফ সিজনেও কয়েকবার আম হারভেস্ট করতে পারবেন। এ জাতের আম বেশ বড় সাইজের ও সুস্বাদু বলে তিনি জানান।

আম গাছের পরিচর্যা ও রোগবালাই দমন করা নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, আমগাছে তেমন কোনো রোগবালাই হয় না। এছাড়া পোকামাকড়ের আক্রমণও খুব একটা বেশি হয় না। তারপরও রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মাঝে মধ্যে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক স্প্রে করা হয়। এছাড়া গাছে মুকুল আসার আগে ও আমের গুঁটি মটর দানার মতো হলে কার্বান্ডাজিম ও সাইপারম্যাথিন গ্রুপের ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। ফুল-ফলের সময় নিয়মিত সেচ দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে কথা হয় কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনির সাথে। তিনি বলেন, আমাদের কৃষি উদ্যোক্তারা বিভিন্ন সোর্স থেকে আমের বিভিন্ন জাত সংগ্রহ করছেন। তবে বাংলাদেশে বারি উদ্ভাবিত আমের বিভিন্ন ভালো মানের জাত আছে। এছাড়া কাটিমন, ল্যাংরা ও হিমসাগর আমও যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং চাষ করে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। তবে রঙ, লেইট ভ্যারাটি ও বছরে কয়েক বার হারভেস্ট করা যায় এমন কিছু বিদেশি ভ্যারাইটির প্রতি আমাদের কৃষকরা ঝুঁকছেন।

তিনি আরো বলেন, আমের সুন্দর রঙ ও অসময়ে উৎপাদিত আমের বাজার দর ভালো পাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশে বারি উদ্ভাবিত লেইট ভ্যারাইটি বারি-৪ যথেষ্ট ভালো একটি ভ্যারাইটি। এছাড়া বছরে দুই/তিনবার মুকুল আসা জাত বারি-১১ চাষে কৃষকরা বেশ সফলতা পাচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //