টেকনাফে ৫ কৃষককে অপহরণ

কক্সবাজারের টেকনাফে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করা হয়েছে পাঁচ কৃষককে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ভোরে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা।

অপহৃতরা হলেন- টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী এলাকার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে মো. জিহান (১৩), একই এলাকার ফকির আহম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২), আব্দু রকিমের ছেলে মোহাম্মদ নুর, মৃত মো. ছৈয়দুল্লাহর ছেলে মো. শামীম ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহমান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী।

অপহৃতদের স্বজনদের বরাতে রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, বুধবার রাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী পাহাড়ি এলাকা সংলগ্ন ফসলি খেত পাহারা দিচ্ছিলেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ভোররাতের দিকে গহীন পাহাড়ের দিক মুখোশধারী একদল দুর্বৃত্ত অস্ত্রের মুখে পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যায়। পরে স্বজনরা বিষয়টি অন্যদের জানান।

অপহৃত জিহানের মা ফাতেমা বেগম জানান, সকালে তার ছেলেসহ ৫ কৃষককে অপহরণের ঘটনা জানতে পারেন। পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। দুপুরের দিকে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি মোবাইলে কল দিয়ে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

তিনি বলেন, এর মধ্যে মোহাম্মদ নুরের স্বজনদের কাছে ১৫ লাখ টাকা এবং অন্য চারজনের স্বজনদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ওই দুর্বৃত্ত।

তবে এই অপহরণের বিষয়ে পুলিশ অবহিত নয় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি। তিনি বলেন, স্থানীয় কয়েক গণমাধ্যম কর্মীর কাছ থেকে ঘটনাটি শুনেছি। এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশের কাছে লিখিত বা মৌখিক কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি। তারপরও ঘটনাটি শোনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে গত ৯ মার্চ টেকনাফ উপজেলার হ্নীলায় অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ (৬) ১২ দিনেও উদ্ধার হয়নি। যদিও পুলিশ এই অপহরণে ব্যবহৃত অটোরিকশার চালক ও সংঘবদ্ধ চক্রের নারী সদস্যসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার ও অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি ওসমান গনি।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সদর থেকে অপহৃত আরেক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রাশিকুল ইসলামকেও (১৫) উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। মিয়ানমার সীমান্তের টেকনাফে গত এক বছরে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১০১টি। তাদের মধ্যে ৪৬ জনকে ছাড়িয়ে আনতে হয়েছে মুক্তিপণ দিয়ে। কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ এর মার্চ নাগাদ টেকনাফে পাহাড়কেন্দ্রিক যে ১০১টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ৫১ জন স্থানীয় এবং ৫০ জন রোহিঙ্গা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //