শেরপুরে হত্যা মামলায় কিশোর গ্যাংয়ের এক সদস্য গ্রেপ্তার

শেরপুরের শ্রীবরদীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে চাঞ্চল্যকর এসএসসি পরীক্ষার্থী বিপ্লব হাসান (১৫) হত্যার মূলহোতা ও মামলার অন্যতম আসামি আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে জামালপুর ক্যাম্পের র‌্যাব-১৪।

গতকাল মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাতে অভিযান চালিয়ে ঢাকার উত্তরখান এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে ৬ মার্চ বুধবার সকালে শ্রীবরদী থানায় সোপর্দ করা হয়।

জামালপুরের র‌্যাব-১৪ লিখিত প্রেস ব্রিফিংয়ের জানায়, নিহত বিপ্লব শ্রীবরদীর দহেরপাড় গ্রামের নানা হাজি আব্দুল মজিদের বাড়িতে থেকে মোহাম্মদ আলী মেমোরিয়াল বিদ্যানিকেতনে পড়া লেখা করতো। সে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। 

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে পার্শ্ববর্তী নিজ মামদামারি কান্দাপাড়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসা মাঠে ওয়াজ মাহফিলে যায় বিপ্লব। সেখানে চরশিমুলচূড়া গ্রামের মোহাম্মদ আরিফ, আসমান ওরফে মনির হোসেন এবং মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২০-২৫ জনের সাথে বিপ্লবের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওয়াজ মাহফিল থেকে নানার বাড়ি ফেরার পথে আরিফ, মনির, মখলেছুর ও আল আমিনসহ তার সহযোগীরা বিপ্লবের ওপর হামলা চালায়।

এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকের ডান পাশে ও নাভীর নিচে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা বাধা দিলে তারা তাদের ওপরও হামলা করে। এক পর্যায়ে গ্রামবাসীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শ্রীবরদী হাসপাতালে নেয়। এসময় তার অবস্থা বেগতিক হওয়ায় দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ভোরে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিপ্লবকে মৃত ঘোষণা করেন।  

এ ব্যাপারে নিহত বিপ্লবের বাবা কাবিল মিয়া বাদী হয়ে আরিফ, মোখলেস, মনিরসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২৫ জনের বিরুদ্ধে শ্রীবরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান আরিফসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে বিপ্লব হত্যার ঘটনায় এলাকায় উত্তাল হয়ে ওঠে। স্থানীয়দের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়। দাবি ওঠে আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার।

পরে জামালপুর ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুলফিকার আলী এবং র‌্যাব-১, সিপিসি-২, ঢাকা এর যৌথ অভিযানে ঢাকার উত্তরখানের হেলাল মার্কেট এলাকা থেকে আল আমিনকে (১৪) গ্রেপ্তার। আজ ৬ মার্চ বুধবার শ্রীবরদী থানার পুলিশের হাতে তাকে হস্তান্তর করা হয়। আল আমিন চরশিমুলচূড়া গ্রামের রহিম মন্ডলের ছেলে। এদিকে ঘটনার সময় স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে আরিফকে (২১) আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন। সে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। পরে কিশোর অপরাধী আল আমিন (১৪) এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বেচ্ছায় স্বীকার করেছে।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাইয়ুম খান সিদ্দিকী জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আল আমিনকে আজ কোর্টে প্রেরণ করা হবে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কোন অপরাধীই রেহাই পাবে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //