বাজার নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না আল-আমিনের

ঘরে খাবার নেই। তাই সকালে যাত্রীবাহী অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন চালক আল আমিন (২৮)। বলে এসেছিলেন বাজার করে বাড়ি ফিরে দুপুরে একসাথে খাবে স্ত্রী-সন্তানসহ বৃদ্ধ মা-বাবার সাথে।

কিন্তু বেপরোয়া গতির বাস পথে তার যাত্রীবাহী অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান চালক আল আমিনসহ সাতজন। 

আজ শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশ ঘরের সামনে বসে ছেলের মৃত্যু শোকে এভাবেই বিলাপ করছিলেন বৃদ্ধ মা আনিছা খাতুন (৬০)। 

তিনি ফুলপুর উপজেলার ভিউ পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছাহের উদ্দিনের স্ত্রী। তবে বর্তমানে তারা ছেলে ও তার পরিবারকে নিয়ে উপজেলার বালিয়া মোড়ে একটি রুম ভাড়া করে বসবাস করে আসছিলেন। 

এসময় তার পাশে বসে কান্না করছিলেন নিহত আল আমিনের বোন উম্মে কুলসুম (৩৮)। 

আনিছা খাতুন বলেন, আমার কোন বসত ভিটা নেই। স্বামী অসুস্থ হয়ে অনেকদিন ধরে বিছানায় পড়ে আছেন। এখন ছেলে আল আমিনই ছিল পরিবারের একমাত্র ভরসা। তার রোজগারেই চলত সংসার। আল আমিন বিয়ে করেছেন। ছয় বছর বয়সী লামিয়া ও তিন বছর বয়সী মোবারক নামে তার দুটি শিশু সন্তান রয়েছে।

এসময় ছেলে হারানোর শোকে কাতর মা আনিছা কাঁদতে কাঁদতে আরো বলেন, আমার ছেলে কই গেলো। এখন সংসারের বাজার কে করবে, কে আমাদের দেখবো। আল্লাহ্ গো তুমি আমার ছেলেরে ফিরাইয়া দেও।

এর আগে দুর্ঘটনার খবর শুনে আলালপুর এসে স্বামী হারানোর শোকে কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন নিহত আল আমিনের স্ত্রী হালিমা খাতুন। 

তখন স্থানীয়রা তাকে পানি ঢেলে সুস্থ করে বাড়ি পৌঁছে দেন।

হালিমা খাতুন বলেন, অভাবের সংসারে টেনেটুনে দিন যেতো। আজকে প্রশাসন আমাদের সহযোগিতার কথা বলছে, তা দিয়ে কদিন চলবে। তবে এমন বেপরোয়া গতিতে যেন কারো প্রাণ না যায়। আমার মতো কেউ যেনো অল্প বয়সে বিধবা না হয়।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১১টায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আলালপুর নামকস্থানে বাস ও যাত্রীবাহী অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //