ক্ষতিকর জেনেও ডোমারে বাড়ছে তামাক চাষ

তামাক কোম্পানিগুলোর দেওয়া সুবিধার কারণে ও তামাক চাষে রোগ বালাই কম থাকায় দিনের পর দিন তামাকের চাষ বেড়েই চলেছে ডোমারে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে তামাক চাষ অনেক কমে গেছে।

রবিশস্যের বদলে তামাক চাষের প্রতি ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। শুধু নীলফামারী জেলায় নয়, তামাক কোম্পানিগুলোর আর্থিক সহযোগিতায় দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে তামাক চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ- বিনা মূল্যে বীজ, ঋণে সার ও নগদ অর্থসহ তামাক ক্রয়ের নিশ্চয়তা। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর জেনেও অধিক মুনাফা লাভের আশায় তামাকের ক্ষেতে মাঠে কাজ করছেন নারী ও শিশুরাও।

ডোমার উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠজুড়ে চাষ হচ্ছে বিষবৃক্ষ তামাকের। রবিশস্যের চাষ বাদ দিয়ে কৃষকরা আকৃষ্ট হচ্ছে তামাক চাষে।

কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হলেও বিড়ি কোম্পানির লোভনীয় আশ্বাসের কারণে তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। গ্রামের বিস্তীর্ণ জমিজুড়ে তামাকের চাষ বেড়েই চলেছে। তামাক জীবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর জেনেও কৃষকরা পরিবার নিয়ে তামাকের মাঠ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলার ৬ উপজেলায় তামাক চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। যা বর্তমানে আরো বেশি জমিতে তামাকের আবাদ করছে কষকরা।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের এ তথ্য মানতে নারাজ মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা। তারা বলেন, আগের বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণ পরিমাণ ফসলি জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে।

তারা আরো জানান, অর্থ সংকটে থাকেন গ্রামগঞ্জের ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিরা। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোম্পানিগুলো ওই সব চাষিদের তামাক চাষে উৎসাহিত করেন এবং তাদের মধ্যে কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে তামাকের সার ও বীজ সরবারহ করে থাকেন। ফলে তামাক চাষ বেড়েই চলেছে।

হরিনচড়া ইউনিয়নের বেশ কিছু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শর্ত ছাড়া নগদ অর্থ প্রদানসহ কোম্পানির নিজস্ব সুপারভাইজাররা প্রতিনিয়ত তামাক চাষিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

এদিকে কোম্পানিগুলো তামাক ক্রয়ের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তাও দিয়ে থাকে। মূলত এ কারণেই তামাক চাষ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও তামাক চাষ করেন কৃষকরা।

সোনারায় ইউনিয়নের হাজীর মোড়ের কৃষক মাহাতাব আলী বলেন, তামাক চাষের জন্য কোম্পানিগুলো অগ্রিম ঋণে সার ও নগদ অর্থ দিয়ে থাকেন এবং ক্রয়ের শতভাগ নিশ্চয়তা দেয়। তাই আমরা তামাক চাষ করি।

রমানাথ রায় নামে এক কৃষক বলেন, এক বিঘা জমিতে তামাক চাষে খরচ হয় ৭ থেকে আট হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় তামাকের ফলন হয় ৬ থেকে ৭ মণ। কোম্পানিগুলো প্রতিমণ তামাক ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় ক্রয় করে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //