সম্পদ বেড়েছে আইনমন্ত্রীর

সহায়-সম্পদ বেড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনিসুল হকের। তিনি আইন-বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী। আর বাড়ি নেই তাজের। জেলার অন্যান্য আসনের সরকার দলীয় এমপিদেরও সহায়-সম্পদ বেড়েছে। তাদের হলফনামা বিশ্লেষণে পাওয়া গেছে এই চিত্র।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের আওয়ামীলীগ প্রার্থী বদরুদ্দোজা মো: ফরহাদ হোসেনের নগদ টাকার পরিমান ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫৫০ টাকা। তার স্ত্রীর নামে নগদ আছে ৬৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা। বন্ড, ঋনপত্র, কোম্পানীর শেয়ার নিজের নামে ৫ কোটি ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৭ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার ও বন্ড রয়েছে।

এছাড়া অন্যান্য খাতে তার বিনিয়োগ রয়েছে ৪১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৬৯ টাকা। তার নিজের নামে গাড়ি আছে দুটি । একটির মূল্য ৫০ লাখ, আরেকটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে আরেকটি গাড়ি। যেটির মূল্য সাড়ে ১১ লাখ টাকা। তার নিজের নামে স্বর্ণ আছে ২০ তোলা আর স্ত্রীর ১০০ তোলা।  নিজের নামে উত্তরায় রাজউকে ৩ কাঠা প্লট এবং স্ত্রীর নামে ৪১ লাখ ২১ হাজার ৪২৪ টাকা মূল্যের ১০ কাঠা প্লট রয়েছে পূর্বাচলে। পড়াশুনায় স্নাতকোত্তর। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) শাহজাহান আলম সাজু পড়াশুনায় এমবিএস (মাস্টার্স অব বিজনেস ষ্টাডিস)। তার নিজ নামে নগদ টাকা রয়েছে ১২ লাখ ২২ হাজার ১৬৪ টাকা, স্ত্রীর নামে ২২ লাখ ২৫ হাজার ৩৩২ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমান ২ লাখ ৯ হাজার ৬৯৮ টাকা। বন্ড-ঋণপত্র ও শেয়ারে বিনিয়োগ ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা, পোষ্টাল-সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ২ লাখ ৩৫ হাজার ৭৪০ টাকা। তার ৩ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি রয়েছে। স্বর্ণ নিজ নামে ২০ তোলা এবং স্ত্রীর নামে ১ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণ রয়েছে। তার নামে কৃষি জমি রয়েছে ৮ শতক। যার মূল্য ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ৫২৫ টাকা। ৭৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪১৮ টাকা মূল্যের ১৫৮.৯৮ শতক অকৃষি জমি রয়েছে নিজের ও স্ত্রীর নামে । ৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৪২ টাকা মূল্যের একটি দালান রয়েছে 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর উপজেলা ও বিজয়নগর) আসনের প্রার্থী শিক্ষায় মোকতাদির চৌধুরী এমএসএস পাশ। তার নামে বর্তমানে কোন মামলা নেই। আগের ৫টি মামলার উল্লেখ রয়েছে হলফনামায়। যেগুলো আদালত খারিজ ও কোয়াশ করে দিয়েছেন এবং বাদী প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। 

কৃষিখাত থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ব্যবসা বা পেশা থেকে ১১ লাখ ২৭ হাজার ৭০০ টাকা, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র-ব্যাংক আমানত থেকে ৩ লাখ ৯৪ হাজার, পেশা থেকে ২৫ লাখ ৫০ হাজার,সংসদ সদস্য হিসেবে আনুতোষিক হিসেবে পান ৬ লাখ ৬০ হাজার, মৎস্য চাষ থেকে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ব্যাংকের সুদ, টকশো, সভা-সেমিনারের সম্মানী এবং কলাম লেখা থেকে আয় ২ লাখ ৯৬ হাজার ৫২০ টাকা, করমুক্ত আয় ১৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭০ টাকা। তার নিজ নামে নগদ টাকার পরিমান ২০ লাখ টাকা। এছাড়া  নিজের এবং স্ত্রীর  নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমান ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ১১ টাকা। শেয়ার রয়েছে ১০ লাখ টাকা মূল্যের। নিজের নামে ৪৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং ৩৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৭৫ টাকার এফডিআর, স্ত্রীর নামে ২০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র এবং ৫০ লাখ টাকার পেনশন স্কীম, ৩ মাস অন্তর সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩০ লাখ টাকার। ব্যাক্তিগত ঋণ প্রদান ২ লাখ টাকা। নিজের নামে ৮৮ লাখ ৪৩ হাজার ২৬৬ টাকা দামের গাড়ি, স্ত্রীর নামে ২৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা দামের গাড়ি রয়েছে। তার নামে ৩০ ভরি স্বর্নালংকার এবং স্ত্রীর নামে ৫৮ ভরি স্বর্নালংকার রয়েছে। স্থাবর সম্পদে তার নামে ৬ লাখ ৬ হাজার টাকা মূল্যের ১ দশমিক ৯৬ একর, ৪১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা মুল্যের ৮৫ শতক জমি রয়েছে এবং ৫৬ শতক পুকুর রয়েছে। স্ত্রীর নামে ৩৬ লাখ ৬ হাজার ৬’শ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। স্ত্রীর নামে উত্তরায় বাড়ি, গাজীপুরে ৩৩ শতক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতিতে জমি রয়েছে। এছাড়াও গ্রামের বাড়ি চিনাইলে ৯ লাখ টাকা মূল্যের একটি দ্বিতল ভবন এবং পূর্বাচলে ৩১ লাখ ৮ হাজার টাকা মূল্যের জমি রয়েছে। বিটিআইয়ে ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তাদের নামে।    

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, আইন-বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের নগদ রয়েছে ১০ কোটি ৯২ লাখ ৯৪ হাজার ১৯৯ টাকা নগদ। বৈদেশিক মুদ্রা ১৪০৯৩.৫৮ ইউএসডি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৬ কোটি ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৭ টাকা। ৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার রয়েছে। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৫ কোটি ৭৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৮ টাকার। 

৫ কোটি ৪৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ৪টি মোটরগাড়ি ও একটি মোটর সাইকেল রয়েছে তার। স্বর্ণ রয়েছে ২০ ভরি। ১৬ লাখ টাকা মুল্যের ৮ বিঘা কৃষি জমি এবং ৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা মূল্যের ১ একর ২২.৫ পয়েন্ট অকৃষি জমি এবং পূর্বাচলে ২৫ লাখ ৫১ হাজার ৮৫৮ টাকা মূল্যের একটি প্লট রয়েছে। এছাড়া বনানীতে বাড়ির অর্ধেক মালিকানা এবং ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের দুটি ফ্লাট রয়েছে। এছাড়া ৩টি পৈত্রিক মৎস্য খামার রয়েছে। পড়াশনায় এল.এল.এম। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের আওয়ামীলীগ প্রাথী ফয়জুর রহমান বাদলের বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে বাৎসরিক আয় ১ লাখ ৮৯ হাজার, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানতের সুদ ৪ লাখ ৯ হাজার ৪২৫ টাকা, চাকুরী (পরিচালক সম্মানী) ৬০ লাখ টাকা, অন্যান্য ৯ লাখ ১ হাজার ৮৩৫ টাকা। নিজ নামে নগদ ৩ কোটি ৪৭ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৯ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৪১ লাখ ৪৫ হাজার ৩’শ টাকা রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমান ৬৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪৮৪ টাকা, স্ত্রীর নামে ৭ লাখ ৩০ হাজার ১৬১ টাকা বন্ড-ঋণপত্র ও শেয়ার নিজ নামে ১০ কোটি ৮৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫’শ টাকা, স্ত্রীর নামে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পোষ্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ৫০ লাখ টাকা নিজ নামে এবং স্ত্রীর নামে ৩ কোটি ৯০ লাখ ৯৫ হাজার ৬১৮ টাকা। ১ কোটি ৮ লাখ টাকা মুল্যের গাড়ি রয়েছে তার। ২০ তোলা করে স্বর্ণ রয়েছে নিজের ও স্ত্রীর নামে। ৯ কোটি ৭৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫৪৪ টাকা মূল্যের ১৫.৯০২ একর কৃষি জমি নিজের নামে এবং স্ত্রীর নামে ১.৯৭ একর কৃষি জমি রয়েছে। যার মূল্য ১৮ লাখ ১২ হাজার ৪’শ টাকা। অকৃষি জমি স্ত্রীর নামে ১৩ কাঠা ৩০ ছটাক। যার মূল্য ২ কোটি ২৫ হাজার টাকা। ঢাকায় নিকুঞ্জে ৪ কোটি ৬৮ লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের জমিসহ ৩ তলা বাড়ি। এছাড়া নিজ নামে বনানীতে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকা মূল্যের ৩টা অ্যাপার্টমেন্ট এবং স্ত্রীর নামে ১৯ লাখ টাকা মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। তার অন্যান্য সম্পদ রয়েছে ২৯ লাখ ১৬ হাজার ৯’শ টাকার। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের প্রার্থী ক্যাপ্টেন অব. এ বি তাজুল ইসলামের কৃষি খাত থেকে আয় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। শেয়ার-সঞ্চয় ও ব্যাংক আমানত থেকে আয় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৭ টাকা। পেশা থেকে আয় ১৬ লাখ ৫০ হাজার। চাকুরী থেকে বাৎসারিক আয় ৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। 

তার  নগদ টাকার পরিমান ৫৯ লাখ ৭০ হাজার ৪৪০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ ২৪ লাখ ৭৮ হাজার,বন্ড-ঋনপত্র ও মেয়ারে বিনিয়োগ ৩২ হাজার টাকা। ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা মুল্যের গাড়ি রয়েছে তার। স্বর্ণ আছে ৫০ ভরি। কৃষি জমির পরিমান ২৫০ শতাংশ। যা পৈত্রিক সূত্রে পেয়েছেন। ঢাকার গুলশানে ৭ কাঠা জমির ওপর ৮ তলা বাড়ি। যা এক পুত্র ও দুই কন্যাকে হেবা ঘোষণা দলিলের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছেন। তিনি পড়াশুনায় এমডিএস (মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট ষ্টাডিজ)।