সপ্তমীর অঞ্জলিতে শুরু হলো দুর্গাপূজা

বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। সপ্তমী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হলো মূল পূজা। তবে মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের বাদ্য, ঢোল, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খনাদ, উলুধ্বনি আর পুরোহিতের মন্ত্র পাঠে দেবীর ষষ্ঠী তিথিতে বোধন পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা।

আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) সপ্তমী পূজা। ভক্তরা উপবাস থেকে অঞ্জলি দেবেন দেবী দুর্গার চরণে। নানা বয়সী পূণ্যার্থী দুর্গা প্রতিমার সামনে এসে প্রণাম করছেন। কেউ কেউ দেবীর কাছে প্রকাশ করছেন মনোবাঞ্ছা। অঞ্জলি শেষে গ্রহণ করবেন চারণামৃত তারপর প্রসাদ।

‘সপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে পূজা হয় দেবীর। সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়। এরপর দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করেন ভক্তরা।’

গতকাল শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ষষ্ঠীর সকালে হয়েছে কল্পারম্ভ, যার মধ্য দিয়ে শুভ শক্তির প্রত্যাশা করে শুরু হয় পূজা সন্ধ্যায় বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে সিলেট জেলার ৬১৭টি মণ্ডপে বিল্ব বৃক্ষ বা বেল গাছের পূজার মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে আবাহন করে শুরু হয়েছে দুর্গোৎসব।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দিনপঞ্জিকা অনুসারে এ বছর দুর্গাদেবী স্বামীর ঘর স্বর্গ ছেড়ে মর্ত্যে পিতৃগৃহে পদার্পণ করছেন ঘোটকে চড়ে।

মন্দিরগুলোকে সাজানো হয়েছে নানা রংবেরঙে আর বর্ণিল আলোকসজ্জায়। দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে পালন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের আমেজ।

আগামী (২৪ অক্টোবর) মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে  শেষ হবে ৫দিন ব্যাপি এ উৎসবের। এ দিন দুর্গাদেবী ভক্তদের কাঁদিয়ে ঘোটকে চড়ে মর্ত্যলোক ছেড়ে চলে যাবেন কৈলাসে।

জানা যায়, এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তারমধ্যে সিলেট মহানগর ও জেলায় ৬১৭টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। এতে সার্বজনীন পূজা ৫৬৯টি ও পারিবারিক পূজা ৪৮টি।

সিলেট মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রজতকান্তি গুপ্ত জানান, সিলেটের ৬১৭টি মণ্ডপের প্রতিনিধি দলের সাথে ইতিমধ্যে ২ দফা সভা হয়েছে। প্রতিটা পূজায় মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। সকল পূজা কমিটিকে সরকারের গাইডলাইন মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পূজা মণ্ডপগুলোতে সার্বক্ষণিক স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এখন (সপ্তমী পূজা) পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দুর্গাপূজা উদযাপনে সকল সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সকলের সহযোগিতায় ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে এবারের দুর্গাপূজা উদযাপনের মাধ্যমে শেষ হবে।

সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘যারা পূজা উদযাপনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। পূজার নিরাপত্তায় আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছি।’

নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বাসানো হয়েছে জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ বলেন, ‘সবার সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদার সাথে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //