বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, বন্যার শঙ্কা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও তিন দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে বাড়তে শুরু করা তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আজ সোমবার (১৯ জুন) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল রবিবার রাত পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ সকাল থেকে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পানি এভাবে বাড়তে থাকলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।

এদিকে হঠাৎ তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। এছাড়া ফসলের খেত পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানির শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। 

ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের শাহিনুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ উজানের পানি আসতে থাকে ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। শনিবার পানি কমলেও গতকাল রাত থেকে পানি হু-হু করে বাড়তে থাকে। পানি বাড়ায় এখানকার নিম্নাঞ্চলের অনেক জায়গা প্লাবিত হয়েছে।

গ্রামবাসী ময়নুল বলেন, এ সময়ে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সে কারণে এখানকার মানুষগুলো প্রস্তুতি নিয়ে রাখে। তবে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পরেছেন বাসিন্দারা। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও ছোট বাঁচ্চাদের নিয়ে বিপদে আছি।

টেপা খড়িবাড়ী পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, আমার এলাকার কিছু জায়গায় পানি প্রবেশের খবর পেয়েছি। ওইসব এলাকাতে সবসময় খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। যেসব এলাকায় পানি ঢুকেছে সেসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে প্রশাসনকে দেওয়া হবে।

এদিকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নিচু এলাকায় পানি ঢুকছে। আমরা স্ব স্ব ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে সবশেষ খবর রাখতে বলেছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া আমরা জরুরি যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সজাগ রয়েছি।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে তিস্তার বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। মহিষখোচা এলাকায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যায়ে বেরিবাধ করা হয়েছে। এছাড়াও ভাঙ্গণ প্রবন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //