ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এক ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে জঙ্গলে আটকে রেখে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে গজারিয়া থানার এএসআই সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে।

আজ সোমবার (২০ মার্চ) সকাল ৯ টার দিকে চর বাউশিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে এএসআই সুমন মিয়াসহ তার সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এএসআইকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী দোকান মালিক শাকিল ফরাজী (২৬) গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্য বাউশিয়া গ্রামের সিঙ্গাপুরপ্রবাসী এমদাদুল হক ফরাজীর ছেলে।

ভুক্তভোগী শাকিল ফরাজী বলেন, রবিবার সন্ধ্যায় মধ্য বাউশিয়া বাসস্ট্যান্ডে তার খাজা আজমেরী ভ্যারাইটিজ স্টোর নামে দোকানে গিয়ে গজারিয়া থানার এএসআই সুমনের মাধ্যমে জানতে পারেন তার নামে নারায়ণগঞ্জে বন্দর থানায় একটি মাদক মামলা হয়েছে। এসময় মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখতে চাইলে অপারগতা পোষণ করেন এএসআই সুমন। এর মধ্যে সোমবার সকাল ৯টার দিকে একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকারে শাকিল ফরাজীকে দোকান থেকে তুলে নেন এএসআই সুমন। এসময় গাড়িতে তারা দুজন ছাড়াও টিশার্ট পরিহিত এসআই পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি, কনস্টেবল রফিকুল ও গাড়ির চালক ছিলেন। চালক গাড়িটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চর বাউশিয়া এলাকার এক নির্জন বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়েই একটি পিস্তল দেখিয়ে তাকে দুই লাখ টাকা দিতে বলেন এএসআই সুমন। তার দাবিকৃত টাকা না দিলে মাদক মামলার আসামি হিসেবে তাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। এসময় শাকিল ফরাজী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করে তাকে হ্যান্ডকাপ পড়ানোর চেষ্টা করা হয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন এগিয়ে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করেন।

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার এএসআই সুমন জানান, তার এক বন্ধু নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় কর্মরত। সেখানে শাকিলের নামে একটি মাদক মামলা হয়েছে। সেই বন্ধু আজ গজারিয়া থানায় আসে এবং বিষয়টি নিয়ে তারা নিরিবিলি কথা বলার জন্য শাকিলকে ওই বাগানে নিয়ে যান।

তবে আসামিকে আটক না করে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে নিরিবিলি জায়গাতে কেন নিয়ে যেতে হবে- এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি এএসআই সুমন।

মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুন জানান, এমন অভিযোগের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে এএসআই সুমনকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //