কাজে আসছে না বালাসী-বাহাদুরাবাদ নৌ-টার্মিনাল

ফুলছড়ির বালাসী থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ নৌরুটে পরীক্ষামূলক লঞ্চ সার্ভিস চালু করে বিআইডব্লিউটিএ। এতে ২২ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের ৯ এপ্রিল আশার আলো দেখে ওই অঞ্চলের মানুষ। নৌরুট সচল রাখতে উভয় পাশে দুটি টার্মিনালও নির্মাণ করা হয়। রংপুর বিভাগের আট জেলার সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ সহজ করতে নির্মাণ করা হয়েছিল টার্মিনাল দুটি। এই টার্মিনাল দুটি এখন স্মৃতি হয়েই দাঁড়িয়ে আছে। যা সাধারণ জনগণের কোনো কাজে আসছে না।

বালাসী ও বাহাদুরাবাদ নৌরুটে ফেরি সার্ভিসের জন্য নেওয়া হয়েছিল মেগা প্রকল্প। ২০১৭ সালে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। পরে দুদফায় প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ১৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা দাঁড়ায়। টার্মিনাল দুটির কাজ শেষ হওয়ার পর ২৬ কিলোমিটার বিশাল দূরত্বের পথ নাব্যতার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে ফেরি চলাচলের অনুপযোগী বলে ঘোষণা দেয় বিআইডব্লিউটিএ।

বালাসীঘাট টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, টোল আদায়ের বুথ, বাস টার্মিনাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ব্যারাক, পাইলট বিশ্রামাগার, অফিস, মসজিদ, খাবারের হোটেল, আনসার ব্যারাকসহ নান্দনিক এসব স্থাপনা। আকর্ষণীয় অবকাঠামোগুলো জনমানববিহীন হয়ে পড়ে আছে। পাহারা দেওয়ার জন্য কয়েকজন আনসার সদস্য ছাড়া আর কেউ নেই।

ব্রিটিশ শাসনামলে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তা মুখ ঘাটকে নিজেদের বিভিন্ন পণ্য আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহার করত ব্রিটিশরা। যমুনা নদীর পাড়ে অবস্থিত এই ঘাটটি রেলওয়ের লোড-আনলোড এবং যাত্রী পারাপারের স্টেশন হিসেবেও ব্যবহার করা হতো।

তৎকালীন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঢাকা জেলার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে যাত্রী ও মালামাল পারাপারের জন্য যোগাযোগ গড়ে তুলতে চালু করে এই ফেরি সার্ভিসটি।

এর পর থেকেই এ ঘাট দিয়ে স্বল্পব্যয়ে অল্প সময়ে যাত্রী পারাপার, কৃষিপণ্য, ডিজেল, সার সরবরাহসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন করা হতো। পরে নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে ২০০০ সালে এই রুটটি বন্ধ ঘোষণা করে রেল কর্তৃপক্ষ। তখন থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এই রুটে ফেরি চলাচল।

এ ব্যাপারে ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ বলেন, এই নৌরুটটি একসময় উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার মানুষ ব্যবহার করত। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে এখন বন্ধ। অনেক পথ পায়ে হেঁটে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //