আর্বজনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে লবণদহ নদী

দখল, দূষণ ও আর্বজনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে গাজীপুর শ্রীপুরের এক সময়ের খরস্রোতা নদী লবণদহ। অনাবাদি হয়ে পড়েছে নদীর দুই পাশের ফসলি জমি। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ।

জানা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুরে রাথুরা শালবনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত প্রাকৃতিক এক জলাভূমির নাম লবলং সাগর বা লবণদহ নদী। এক সময়ের লবলং সাগর এখন দখল- দূষণে চরম অস্তিত্ব সংকটে। নদী ভরাট করে, গতিপথ পরিবর্তন করে গড়ে উঠেছে শিল্পকলকারখানা। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই পাশ দখল করে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার কারণে নদীর গতিপথ সরু হয়ে গেছে। এ ছাড়াও শিল্পকারখানার রাসায়নিক মিশ্রিত পানিতে দূষিত হচ্ছে নদীর পরিবেশ। অন্যদিকে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হওয়ায় নদীর তীরবর্তী নিচু ফসলি জমিগুলো পানিতে তলিয়ে থাকার কারণে অনাবাদি হয়ে রয়েছে কয়েক বছর ধরে। নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। নদী দখলমুক্ত ও ফসলি জমি রক্ষার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

সম্প্রতি জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী ব্রীজের লবলং খালের গৃহস্থালি ও বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণের চিত্র পরিদর্শন করেছেন। এ সময় জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকায় মেঘনা নিট কম্পোজিট লিমিটেডের ইটিপি (পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া) পরিদর্শন শেষে বলেন, জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের পক্ষ থেকে কখনই বলব না ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ করে দেওয়া হোক।

শুধু এটাই বলব- ম্যানেজমেন্ট চেঞ্জ করে দেন। অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার করতে বলব। তাদের প্রতি আহ্বান জানাতে চাই- আগামী প্রজন্মের কথা মনে রেখে আপনারা দূষণমুক্ত শিল্প গড়ে তুলুন।

শ্রীপুরের মেয়রকে সতর্ক করে বলেন, পরিবেশ আইন ভঙ্গ করলে তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হবে। বিশাল কারখানার সামান্য জরিমানা দিয়ে ক্ষতিপূরণ হবে না। আইন খতিয়ে দেখে যারা পরিবেশের ক্ষতি করছে তাদের জেলে নিতে হবে। এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসনকে দুই মাস সময়ের মধ্যে পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, নদী দূষণ ও দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন সবসময় তৎপর রয়েছেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //