বিলুপ্তির পথে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ

২০০২ সালে দেশে সর্বপ্রথম ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ শুরু হয় চাঁদপুরে। ডাকাতিয়া নদীতে শুরু হওয়া এই মাছ চাষ পদ্ধতিকে ধরা হয় বাংলাদেশের মডেল।

২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁদপুর এলে তিনি হেলিকপ্টার থেকে এমন মাছ চাষ প্রকল্প দেখে অবাক হন। খাঁচায় মাছ চাষের সম্ভাবনা ও লাভজনক দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত হন তিনি। এরপর থেকেই দেশের সব নদী অঞ্চলে খাঁচায় মাছ চাষের বিস্তার ঘটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা এবং বিস্তার লাভ করে মাছ চাষের এ পদ্ধতি।

কিন্তু খাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং ডাকাতিয়া নদীর পানি দূষণের কারণে বিলুপ্তির পথে চাঁদপুরের ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ প্রকল্প। এরই মধ্যে পুঁজি হারিয়ে অনেকেই এ ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। চাষিদের দাবি, একদিকে খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি আর অন্যদিকে পানিদূষণের ফলে চাষ করা মাছ মারা যাচ্ছে। এতে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। এ সংকট মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অচিরেই বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে সম্ভাবনাময় এই মৎস্য খাতের।

খাঁচায় মাছ চাষি আলমগীর গাজী জানান, সেনাবাহিনীতে চাকরি শেষে ২০০৫ সালে সাতটি খাঁচা দিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে মাছ চাষ শুরু করেন। ২০১০ সালের মধ্যে তার মাছের খাঁচার সংখ্যা বেড়ে হয় দুই শতাধিক। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মাছের খাদ্যের দাম কয়েক ধাপে বৃদ্ধি ও ডাকাতিয়ার পানি দূষণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। ২০০ খাঁচার মধ্যে বর্তমানে তার খাঁচা রয়েছে মাত্র ৬৫টি।

তিনি জানান, আগে যেখানে ২০ কেজি ওজনের খাবারের বস্তার দাম ছিল ১ হাজার ৫০ টাকা, তা এখন ১ হাজার ৩০০ টাকা হয়েছে। আর ২৫ কেজি ওজনের খাবারের বস্তা ছিল ১ হাজার ৪৪০ টাকা যা এখন কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। গত ছয় মাসেই কয়েক ধাপে কেজিপ্রতি খাবারের দাম বেড়েছ ১৫ থেকে ১৬ টাকা।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে মাছের খাদ্যের দাম কিছুটা বেশি। এ কারণে আগের মতো লাভ করতে পারছেন না চাষিরা। তবে অন্যান্য জায়গার নদী দূষণের মতো চাঁদপুরের পানি এত দূষিত নয়। চাষাবাদকালে বিভিন্ন কারণে কিছু মাছ মারা গেলেও তা খুব বেশি নয়। তবে চাষিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ও চাঁদপুর নদী কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ দল ডাকাতিয়ার পানির নমুনা সংগ্রহ করেছি। রিপোর্ট আসলে বোঝা যাবে মূল কারণ কী।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //