কাদের মির্জার অনুসারীদের হামলা, ইউপির সেবা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের ৪ নং চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হানিফ সবুজ ও ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ খোকনের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইউনিয়ন পরিষদের সব ধরনের সেবা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় সব ইউপি সদস্য একত্রিত হয়ে এ ঘোষণা দেন।

হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় চরকাঁকড়া ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদের ২নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সূচনা বক্তব্য রাখেন, ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন শাহেদ। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিক উল্যাহ লিটন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রহমত উল্যাহ রাসেল, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আলাউদ্দিন, ৮ নম্বর সদস্য বাহার উল্যাহ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিদার হোসেন সৌরভসহ সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যরা।

সভায় বক্তরা ৪ নং চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হানিফ সবুজ (৫০) ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শেখ ফরিদ খোকনের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। একইসাথে হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন ও শপথ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য জানান, চেয়ারম্যানের উপর হামলাকারীরা কাদের মির্জার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তাদের ভয়ে কেউ এলাকায় মুখ খুলে কথা বলতে সাহস সাহস পায় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের ২নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জামাল উদ্দিন ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণার সত্যতা নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হয়েছে। এ বিষয়ে পরিষদের সব সদস্য সভায় একমত পোষণ করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান বলেন,এ বিষয়ে কেউ আমাকে অবহিত করেনি।

উল্লেখ্য, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী বিল্লা বাড়ির সামনের সড়কে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার অনুসারীরা চরকাঁকড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হানিফ সবুজের ওপর এ হামলা চালায়।

হামলার শিকার হানিফ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অনুসারী। অপরদিকে, হামলাকারী আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ ও ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওমর ফারুক সবুজ ও তাদের সমর্থকরা মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার অনুসারী।

হামলার শিকার ইউপি হানিফ অভিযোগ করে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইউপি সদস্য খোকনসহ আমি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে বের হই। বের হলে আমি দেখি মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার অনুসারী ফখরুল ইসলাম সবুজ ও তার ভাতিজারাসহ ইউপি সদস্য সবুজ এবং তার ভাই রনি ও প্রদীপ, দুলাল, সাইফুল ইসলাম, লাভলুসহ ২০-৩০ জন ইউনিয়ন পরিষদের সামনের রাস্তায় ওঁৎ পেতে আছে। ওই সময় তারা উল্টো পথে গিয়ে বিল্লা বাড়ির সামনে আমার গতিরোধ করে এবং আমার ওপর হকিস্টিক, লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে অতর্কিত হামলায়। এতে আমার একটি পা ভেঙে গেছে ও মাথায় আঘাত পেয়েছি।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের মির্জা অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা মো. ফখরুল ইসলাম সবুজ ও ইউপি সদস্য মো. ওমর ফারুক সবুজ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে দাবি করেন, তারা এ হামলার সাথে জড়িত নেই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসভি করেননি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //