হাজারো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর পাবনার সারুটিয়া গ্রাম

এলাকাবাসীর সহায়তায় সারুটিয়া গ্রামের এ ঝিলটিকে পরিযায়ী পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শীতের হিমেল হাওয়ায় হাজার হাজার মাইল দূর থেকে উড়ে আসা হাজারো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার সারুটিয়া গ্রাম।

ডানা মেলে আকাশে পাখিদের ওড়াউড়ি। আবার কখনোবা ঝিলের স্বচ্ছ পানিতে জলকেলি। দিনভর খুনসুটি আর পরিযায়ী পাখির কলতানে এক নান্দনিক পরিবেশ। বালিহাঁস, পাতি সরালি, ডাহুক, রাঙ্গা ময়ূরী, ছোট স্বরালীসহ অসংখ্য পরিয়াযী পাখি দেখা মিলছে এই ঝিলে। খাদ্য ও নিরাপদ আবাসস্থলের নিশ্চয়তা পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে এ গ্রামের ঝিলে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি পাখি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে পরম মমতায় পরিযায়ী পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তুলে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ঝিলের প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে সারাদিন মুখর থাকছে পুরো গ্রাম।

চলতি শীত মৌসুমে অন্তত ১৫ থেকে ২০ প্রজাতির কয়েক লাখ পরিযায়ী পাখি এসেছে পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার এই ঝিলে। পাখির জলকেলি ডানা ঝাপটানোর মনোরম দৃশ্য ও দৃষ্টিনন্দন অনাবিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্তের থেকে প্রতিদিন আসছেন পাখিপ্রেমীরা। 

ঝিলে পাখি দেখতে আসা মাসুদ রানা বলেন, আমি পাবনা থেকে পরিবার নিয়ে এখানে এসেছি পাখি দেখতে। এখানে দেশি বিদেশি লক্ষাধিক পাখি এক সঙ্গে দেখতে পেরে পরিবারের সকলেই আনন্দিত। পাখিদের কিচিরমিচির ও কলরবে পুরো ঝিল এলাকা মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয়রা এমন মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান তিনি। 

একই গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গ্রামের প্রতিটি মানুষ পাখিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবসময় সজাগ থাকেন। কেউ ঝিলে পাখি ধরতে এলে গ্রামবাসীরা তাদের হটিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে সংবাদ দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে। প্রশাসন সবসময় সজাগ দৃষ্টি রেখেছে বলে গ্রামবাসীরা পাখির অভয়াশ্রম রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান তিনি। 

স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি পাখির অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে কাজ করছে এলাকাবাসী। গ্রামবাসীদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ঝিলের পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন সবসময় সজাগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। 

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদ হোসেন খান বলেন, দ্রুত নগরায়ণের কারণে পাখিরা হারাচ্ছে তাদের নিবাস। নিরাপদ আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে কমছে জীব বৈচিত্র্য। এই অবস্থায় আজও পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন কিছু মানুষ। পাখির এ অভয়াশ্রমের পরিসর আরও বাড়াতে সার্বিক সরকারি সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //