পাবনা-৪ উপ-নির্বাচন

বাবার অসমাপ্ত কাজ করতে চান ডিলুপুত্র গালিব

প্রয়াত সংসদ সদস্য, সাবেক ভূমিমন্ত্রী, ভাষাসৈনিক, বীরমুক্তিযোদ্ধা ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর রেখে যাওয়া উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডসহ অসমাপ্ত সব কাজ সমাপ্ত করতে চান তার ছেলে গালিবুর রহমান শরীফ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে গালিবুর রহমান শরীফকে দলীয় মনোনয়ন দেন তাহলে তিনি আশাবাদী নির্বাচনী এলাকার মানুষ এ অঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তাকে ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করবেন।

পাঁচ বারের নির্বাচিত এমপি প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে গালিবুর রহমান শরীফ বলেন, ডাবল ডিজিটের কেপিআই জোন খ্যাত পাবনা জেলার অন্যতম একটি আসন ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া। দেশ স্বাধীনের পর তাঁর বাবা আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী হয়ে তার নির্বাচনী এলাকাকে যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছিলেন, তিনি যদি আর কিছু সময় পেতেন তাহলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, শিল্প ও কৃষি বিপ্লব এবং জীবনমানের আরো পরিবর্তন নিশ্চিত করতেন। তাঁর অসমাপ্ত এই কাজগুলোর পাশাপাশি এই নির্বাচনী এলাকাকে আরো আধুনিক, যুগোপযোগী, উন্নয়নমুখী, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ আধুনিক বিপ্লব ঘটাতে চান গালিবুর রহমান শরীফ।

একান্ত সাক্ষাৎকারে সাম্প্রতিক দেশকালকে তিনি বলেন, ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া উপজেলায় প্রায় শতভাগ পাকারাস্তা, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, নানা ধরনের উন্নয়নসহ সরকারের সহযোগিতায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আর এসব সম্ভবের পেছনের কারিগর ছিলেন তার বাবা শামসুর রহমান শরীফ। এ অঞ্চলে তার বাবার সহযোগিতায়, উদ্যোগে, অনুপ্রেরণায় কৃষি ও শিল্প বিপ্লব হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি।

দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আর জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করলে, বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্তসহ ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু, সরকারি কলেজে মাস্টার্স কোর্স চালু, ঈশ্বরদী শহরকে আধুনিকায়নে ঢেলে সাজানো, ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, নির্বাচনী এলাকার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল করা, আধুনিক মানের স্টেডিয়াম ও অডিটোরিয়াম নির্মাণ, সংস্কৃতি চর্চা প্রসারসহ মানুষের কল্যাণে আধুনিক, যুগোপযোগী ও টেকসই উন্নয়নে কাজ করতে চাই, বলেন তিনি।

গালিবুর আরো বলেন, বিএনপি-জামাতের কারণে ঈশ্বরদী ছিল অস্থির, সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজির অভয়ারণ্য। প্রকাশ্য মানুষ খুন, অপহরণ, ছিনতাইসহ নানা আইন পরিপন্থি কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন কিন্তু নিশ্চুপ থাকেনি। বিএনপি-জামাতের এ সব অপকর্ম শক্তভাবে প্রতিহত করতে মাঠে ছিল। আর এর নেতৃত্ব দিয়েছেন তার বাবাসহ আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা।

গালিবুর রহমান শরীফ দাবি করেন, বাবার গৌরব, পরিবারের ঐতিহ্য আর আওয়ামী লীগের সুনাম বজায় রাখতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স থাকবে তার পক্ষ থেকে। এ সব কর্মকাণ্ডে যদি দলীয় লোকজনও জড়িত থাকে, তারাও ছাড় পাবে না।

আমার বাবা শামসুর রহমান শরীফ মারা যাবার পর আমরা তথা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছি। তিনি পুরো জেলার আওয়ামী লীগ পরিবারের কাছে ছিলেন আস্থার কান্ডারি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতা, বিচক্ষণতা আর আন্তরিকতার সাথে। আমার বাবার শূন্যতা দূর করতে, স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ও বিভেদ শূন্য করে গতিশীল এবং চাঙ্গা করতে হবে। বাবার মৃত্যুর পর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে থমকে গেলেও ব্যক্তি পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

গালিবুর রহমান শরীফ বলেন, দলের নীতিনির্ধারক জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যেটা ভালো মনে করবেন, যাকে দিয়ে তাঁর সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করতে পারবেন, তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেবেন। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। আমরা বিভেদ ভুলে, প্ররোচণায় না এগিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করতে চাই।

গালিবুর রহমান শরীফ ঢাকা রেসিডেনসিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ২০০৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে গমন করেন। পরবর্তীতে এপ্লাইড অ্যাকাউন্টে ২০১৩ সালে গ্রাজ্যুয়েশন সম্পন্ন করেন। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিষয়ে পোস্ট গ্রাজ্যুয়েশন সম্পন্ন করেন। পড়ালেখা শেষ করার পর সেখানেই একটি চার্টাড অ্যাকাউন্টিং ফার্মে বিজনেস ম্যানেজার হিসেবে তিনি যোগদান করেন। অ্যাসোসিয়েশন অব সার্টিফাইড চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্টে এনরোলডমেন্ট হন। অফিসিয়ালি কাজের পাশাপাশি তিনি চার্টার্ড কোয়ালিফিকেশন পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণ করে ৯টি মডিউল কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন। আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি তৃণমূল রাজনৈতিক পরিবার থেকে বেড়ে উঠার কারণে দল থেকে দূরে অবস্থান করতে পারেননি। যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে তিনি সেখানে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনগুলোর সব কর্মসূচিতে সরাসরি সম্পৃক্ত থেকেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র দৌহিত্র সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে ওই নির্বাচনেও তিনি প্রচার প্রচারণার দাায়িত্বে ছিলেন। তিনি ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //