পরীমণির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই

মারধর ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমণি ও পরীমণির কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই মামলার বাদী ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ।

ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে সম্প্রতি এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই। অপর দিকে পরীমণির ছোড়া মদের গ্লাসে নাসির উদ্দিন মাহমুদের আঘাত লাগার ঘটনার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

পিবিআইয়ের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খোদা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে চিত্রনায়িকা পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, পরীমণির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য ছিল আজ বৃহস্পতিবার। পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কি না, সে বিষয়ে তার কোনো তথ্য জানা নেই।

পরীমণির আইনজীবীর ভাষ্য, নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বিচার শুরু হয়েছে। পরীমণির দায়ের করা মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। পরীমণি সম্পূর্ণ নির্দোষ।

পরীমণির বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই  ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ৮ জুন পরীমণি ও তার সহযোগীরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে ক্লাব ত্যাগ করার সময় পরীমণি তাকে ডাক দেন। পরে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। 

এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাকে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে পরীমণি হত্যাচেষ্টার জন্য একটি গ্লাস ছুড়ে মারেন, যা তার মাথায় ও বুকে লাগে বলে মামলায় অভিযোগ করেন নাসির উদ্দিন মাহমুদ।

২০২১ সালের ৮ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে চিত্রনায়িকা পরীমণি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন।


মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ওই মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ মে অভিযোগ গঠন করেন। ওই মামলায় পরীমণির সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান।

পরীমণি মামলায় অভিযোগ করেছিলেন, ৮ জুন রাতে তাকে কৌশলে ঢাকা বোট ক্লাবে ডেকে নিয়ে যান তার পূর্বপরিচিত তুহিন নামের একজন। সেখানে জোর করে তাকে মদ পান করানোর চেষ্টা করেন নাসির। একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণের এবং হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।

প্রায় তিন মাস তদন্তের পর পরীমণির করা মামলায় আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে সাভার থানা-পুলিশ বলেছিল, বোট ক্লাবে মারধর ও শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছিলেন পরীমণি। তাকে মারধর ও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযোগপত্রে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম এবং তুহিন সিদ্দিকী ওরফে অমির সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।

পরীমণির মামলার পরই গ্রেপ্তার হন নাসির ও তুহিন। পরে তারা জামিন পান। এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ। মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //