কল্পিত গল্প বিশ্বাস করা ঠিক নয়: বুবলী

গেলো বছর ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ সৈকত নাসিরের ‘ক্যাসিনো’ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন বুবলী। তারপর তাকে দেখা যায়নি জনসম্মুখে। নতুন বছরের প্রথমদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় আকর্ষণীয় অবয়বে হাজির হলেন। সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় তিনি কথা বললেন সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে জানা-অজানা নানা প্রসঙ্গ নিয়ে। 

‘আমি কখনোই আড়ালে যাইনি। কমিটমেন্ট অনুযায়ী শুটিং শেষ করেছি। শুটিং শেষে আমেরিকা গেছি নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমিতে অভিনয়ের ওপর কয়েকটি ওয়ার্কশপ করতে, আড়ালে যাওয়ার গুঞ্জনে বুবলীর জবাব। তিনি আরও বললেন, ‘তিন মাসের ওয়ার্কশপ এক মাসে নেমে এসেছে। করোনাভাইরাস এর জন্য শুরুতে ক্যাম্পাসে ক্লাস করার পর অনলাইনে ক্লাস করতে হয়েছে। অনেক কিছু শিখেছি ওখানে ওয়ার্কশপ করে।’ 

ফেব্রুয়ারির শেষে গিয়ে তিনি দেশে ফিরেছেন নভেম্বরের শেষে। প্রায় নয় মাস বুবলীর কেটেছে নিউইয়র্কে। কেমন ছিল সে অভিজ্ঞতা? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানালেন, ‘ভয়ংকর অভিজ্ঞতা ছিল। যদি কখনো লেখার সুযোগ হয় তাহলে সে অভিজ্ঞতা লিখব। মহামারিতে মানুষের দুর্দশা দেখেছি। অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হতে দেখেছি আশপাশের মানুষকে। বলে বোঝানো যাবে না কিসের মধ্য দিয়ে গেছি। এ সময় যোগাযোগ করতে পারিনি সবার সঙ্গে।’

অবশ্য কাজের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে এ কথা নিশ্চিত করেন বুবলী। বুবলীকে নিয়ে গুঞ্জনের ডালপালা ছড়িয়েছে গেল বছর। দেশের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানকে জড়িয়ে এসেছে মুখরোচক গল্প। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হতাশ কণ্ঠে বুবলী বলেন, ‘আমরা চিত্রতারকা হলেও আমাদের একটি ব্যক্তিগত জীবন আছে। আমি কখনোই একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় দর্শককে জানাতে ইচ্ছুক নই। মানুষ আমার কাজ নিয়ে কথা বলুক, ব্যক্তিগত বিষয় কেন তুলবে? তা ছাড়া যে বিষয়টি নিয়ে মানুষজন কথা বলছে, তা খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয়।’ দম নিয়ে বুবলী বলেন, ‘একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন নিয়ে মনগড়া কথা না বলে সত্য জানার জন্য খানিক অপেক্ষা করা যেতে পারে। আমার বক্তব্য ছাড়া কল্প-কাহিনি বিশ্বাস না করতে দর্শকের প্রতি আমার একান্ত অনুরোধ রইল।’ 

নিরাপত্তার বলয়ে শুটিং করেন বুবলী। এমন অভিযোগের কথা হাসি দিয়েই যেন উড়িয়ে দিলেন তিনি, ‘আমাদের রূপসজ্জা কক্ষের দরজা খোলা পেলে বাইরের লোকজন ঢুকে পড়ে। ছবি তুলতে চায়। আমি এসবে বিব্রতবোধ করি। কাজের প্রতি মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে। তাই ইউনিটের লোকজনই আমার কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেয়। এটাকেই বাড়িয়ে বলা হয় কোনো ক্ষেত্রে।’ ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ ছেড়ে চলতি সময়ের আলোচিত বিষয় ওটিটি নিয়ে জানতে চাওয়া হলো বুবলীর কাছে। জবাব যেন তার কাছে প্রস্তুতই ছিল, ‘এখন দর্শক স্মার্টফোনে ঝুঁকেছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। অতিমারির সময়ে নেটফ্লিক্সে বড় বাজেটের ছবিও মুক্তি পেয়েছে। আমাদের ছবিও যখন ওটিটিতে মুক্তি পাচ্ছে তখন সাধুবাদ না জানিয়ে উপায় নেই। আমি অবশ্য ঢালাওভাবে সবকিছু ওয়েবভিত্তিক দেখতে রাজি নই। সিনেমাহলের মজা ছোটপর্দায় কখনো পাওয়া যাবে না। তাই সিনেমা হলও থাকুক, ওটিটিও থাকুক এমনটিই চাই।’ কিন্তু এদেশে ওয়েব কন্টেন্ট নিয়ে অশ্লীলতার অভিযোগও তো এসেছে? ‘আসলে আমাদের এমনকিছু নির্মাণ করা উচিৎ নয়, যা আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নয়। ঢালাওভাবে বাইরের সংস্কৃতি গ্রহণ করতে চাইলে তো চলবে না। আমাদের মতো করে মানসম্মত কন্টেন্ট নির্মাণ করতে হবে।’

বুবলী ওয়েব ফিল্ম নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী। তার ভাষ্যে, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য যে কোনো ছবিতে আমি কাজ করতে ইচ্ছুক। হতে পারে সেটা ওয়েব ফিল্ম। যদি গল্প, টিম ও বাজেট ব্যাটে বলে মিলে যায় তাহলে ওয়েব ফিল্মে আপত্তি নেই।’ 

নতুন বছরে নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করেছেন বুবলী। আভাস দিলেন কাজের মাধ্যমেও পরিবর্তিত বুবলীকে পাবেন দর্শক। যদি তাই হয়, তাহলে ইন্ডাস্ট্রিরই লাভ। প্রথমবার তাকে দেখা যাবে নিরব হোসেনের বিপরীতে সৈকত নাসিরের ‘ক্যাসিনো’ ছবিতে। তার ভাষ্যে, ‘গল্পসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি মিললে যে কারও বিপরীতে কাজ করব। তার প্রমাণ পাওয়া যাবে শিগগিরই।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : বুবলী

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //