কুলেখাড়া

সাধারণত জলাশয়ের ধারে অথবা নিচু ধানের জমিতে কুলেখাড়া দেখা যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে এই আগাছাজাতীয় গাছ বেশ চোখে পড়ে। তবে আগাছা হলেও এটি অন্যান্য শাকের মতো খাওয়া যায়। কেননা এই কুলেখাড়ার রয়েছে বহুবিধ ঔষধি গুণাগুণ। এর পাতা থেকে কা- ও শিকড় সবই মানুষের জন্য দারুণ উপকারী। ব্যাপক কৃষিজমি তৈরি ও অধিক ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কুলেখাড়াকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এর অন্য নাম গোকুলকাঁটা। হিন্দিতে একে তালমাখনা বলা হয়। সংস্কৃতিতে একে কোকিলাক্ষ নামে ডাকা হয়। ইংরেজিতে একে marsh barbel বলে। কুলেখাড়ার বৈজ্ঞানিক নাম Hygrophila auriculata. গাছের বহিরাঙ্গন রোমশ প্রকৃতির। গাছ সহজে ভঙ্গুর হলেও কাঁটার উপস্থিতি লক্ষণীয়। হঠাৎ চলতে গেলে পায়ে কাঁটা বিঁধে বিপদ ঘটতে পারে। এটি যেখানে হয় সেখানে ঝোপঝাড়ে ভরে ওঠে। কেটে গেলে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য কুলেখাড়ার পাতার রস দারুণ কার্যকরী। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর পাতা, কা-, শেকড় পুড়িয়ে একধরনের ওষুধ তৈরি করা হয়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে কুলেখাড়ার পাতার রস হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। আলসার রোগের চিকিৎসায় কুলেখাড়া কার্যকরী ভূমিকা রাখে। বলা হয়ে থাকে কিডনির ও পাকস্থলীর পাথর গলিয়ে দিতে পারে কুলেখাড়া। কুলেখাড়ার শিকড়ের রস খেলে অনিদ্রা দূর হয়। এত উপকারী গুণাগুণ থাকার পরও মানুষের কৃষি উৎপাদনের অতিরিক্ত চাপের মুখে কুলেখাড়া আজ বিপন্ন হতে চলেছে। লেখা ও ছবি: সঞ্জয় সরকার

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //