পদ্মাসেতু পারাপারে কোন যানবাহনে কতো টাকা টোল

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নির্মাণাধীন অবকাঠামো পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সেতুটির মূল কাঠামো পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো। এরপরে সড়ক ও রেলের স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ এই স্প্যানটি স্থাপন করার মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। এটি হচ্ছে পদ্মা সেতুর ৪১তম স্প্যান। অর্থাৎ এর আগে এরকম আরও ৪০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন স্প্যানগুলোর ওপর সড়ক ও রেল লাইনের স্ল্যাব বসানোর কাজও চলছে।

প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়েছিল ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। এসব স্প্যান চীনে তৈরি করে জাহাজে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।

পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।

তবে বাংলাদেশের সরকার চেষ্টা করছে, স্বাধীনতার ৫০ তম বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার। অর্থাৎ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করে যান চলাচল শুরু করতে চায়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো.. শফিকুল ইসলাম জানাচ্ছেন, সাধারণত যেসব নদীতে ফেরি চলাচল করে, সেখানে একটি স্ট্যান্ডার্ড প্রাকটিস রয়েছে যে, ফেরি পারাপারের সময় যানবাহনগুলোকে যে পরিমাণ টোল দিতে হয়, সেতু পারাপারের ক্ষেত্রেও সেটাই টোল নির্ধারণ করা হয়।

সাধারণত বিদেশি অর্থায়নে কোন সেতু নির্মিত হলে কত টাকা টোল হবে, সেটা নির্ধারণে দাতাদের পরামর্শ বা শর্ত থাকে। কিন্তু দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত সেতুর টোল কত হবে, সেরকম কোন নিয়মনীতি নেই।

আপাতত সরকারের সেতু বিভাগ পদ্মা সেতুর জন্য যে টোল হারের প্রস্তাব করেছে, সেটি ফেরি টোলের চেয়ে দেড়গুণ বেশি।

সেতু চালু হওয়ার পর পরবর্তী ১৫ বছরের জন্য মোটরসাইকেলের জন্য ১০৫ টাকা, কার জিপের জন্য ৭৫০ টাকা, ছোট বাসের জন্য ২০২৫ টাকা, বড় বাসের জন্য ২৩৭০ টাকা, পাঁচ টনের ট্রাকের জন্য ১৬২০ টাকা, আট টনের বড় ট্রাকের জন্য ২৭৭৫ টাকা, মাইক্রোবাসের জন্য ১২৯০ টাকা টোল প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতি ১৫ বছর টোলের হার ১০ শতাংশ বাড়ানো হবে। তবে এখনো এই প্রস্তাবের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত টোল কতো হবে, সেটা নির্ভর করে সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর।

মাওয়া ফেরিঘাটের টোল আদায় কেন্দ্র থেকে জানা যায়, বর্তমানে পদ্মা পাড়ি দিতে ফেরিতে দিনের বেলা একটি বাসকে ১ হাজার ৪০০ টাকা টোল দিতে হয়। যাত্রী থাকলে এর সঙ্গে ৪৫০ টাকা যোগ হয়। রাতের বেলা যোগ হবে আরও ৪৭০ টাকা। সব মিলিয়ে যাত্রীবাহী বাসের টোল দিনে ১ হাজার ৮৫০ টাকা এবং রাতে ২ হাজার ৩২০ টাকা।

এছাড়া ফেরি পারাপারে প্রাইভেট কারের টোল ৫০০, মাইক্রোবাসের ৮৫০ এবং মোটরসাইকেলের ৭০ টাকা। ফেরিতে ট্রাকের টোল ১ হাজার ৮৫০ টাকা। এর সঙ্গে নির্দিষ্ট সীমার পর প্রতি টনে ১৬০ টাকা করে টোল আদায় করা হয়।

বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই পরিশোধ বিবেচনায় নিয়েই টোলের এই হার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : তথ্যকোষ

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //