গৃহকর্মীর মৃত্যু: বনশ্রীতে ৩ মামলায় সহস্রাধিক আসামি

রাজধানীর বনশ্রীতে গৃহকর্মী আসমা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় রামপুরা থানায় ৩টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে সরকারি কাজে বাধা ও হত্যার উদ্দেশে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। আরেকটি মামলা হয়েছে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিংসযোগের ঘটনায়।

পৃথক ২ মামলায় এক হাজার থেকে ১২শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আসমার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হত্যার গুজব ছড়িয়ে এই হামলা চালানো হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। অপরটি অপমৃত্যু মামলা।

আজ সোমবার এসব মামলা করা হয়। হামলা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

এদিকে আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আসমার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে লাশ নিয়ে স্বজনরা গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে যান।

গত রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বনশ্রীর ডি ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের ৩২ নম্বর বাড়ির গেটের পাশে আসমার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ছাদ থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত না হলেও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, আসমা ছয়তলার ছাদ থেকে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন।

ভবনটির মালিক দেলোয়ার হোসেনের পরিবারেরও দাবি, আসমা আত্মহত্যা করেছেন। তবে আসমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে এলাকাবাসী দেলোয়ারের বাড়িতে হামলা ও গ্যারেজে পার্কিং করা ৩টি প্রাইভেটকার এবং একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর শেষে অগ্নিসংযোগ করে।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের ওপরও হামলা চালানো হয়। এ সময় ৬-৭ জন পুলিশ সদস্যকে বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। এরই মধ্যে বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।

পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে তারা। তাদের হামলায় রামপুরা থানার ওসি মশিউর রহমানসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে অতিরিক্তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৬ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও ৪৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে। পরে বেলা ১২টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

পুলিশ জানায়, আসমার মৃত্যুর ঘটনায় তার ছেলে আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে রামপুরা থানায় অপমৃত্যু মামলা করেন। এজাহারে বলা হয়, আসমা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন।

অপরদিকে রামপুরা থানার এসআই কামরুল হাসান বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা করেন। এ মামলায় অজ্ঞাত এক হাজার থেকে ১২শ’ জনকে আসামি করা হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, আসমার মৃত্যুর খবর শুনে রামপুরা থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান। তারা পৌঁছানোর আগেই লোকজন জড়ো হয় সেখানে। এলাকাবাসী আসমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে গুজব ছড়ায়।

খবর পেয়ে এক হাজার থেকে ১২শ’ মানুষ ওই বাড়ির সামনে জড়ো হয়। পুলিশ তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও উত্তেজিত জনতা হত্যার উদ্দেশে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। একইসঙ্গে ৩২ নম্বর বাড়িতে হামলা ও গ্যারেজে থাকা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ  সময় পুলিশের এক সদস্যের মোবাইল ফোনও চুরি করা হয়।

অন্যদিকে প্রাইভেটকার ৩টির মালিক দেলোয়ার হোসেন। গাড়িগুলো ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় করা মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেনের চালক উজ্জল মিয়া।

রামপুরা থানার ওসি মশিউর রহমান সমকালকে বলেন, ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যবেক্ষণ চলছে। এরইমধ্যে হামলাকারী কয়েকজনকে শানক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //