রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে কোরবানির গরু-ছাগল বিক্রি ধীরে ধীরে বিক্রি বাড়ছে। গত শনি-রবি ও সোমবারের তুলনায় আজ মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। হাটে ক্রেতাদের উপস্থিতিও অন্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল। তবে গরুর দাম বেশি হওয়ায় এবার পশু বিক্রিও কম হচ্ছে।
অন্য
বছর ঈদের দুই/তিন দিন আগে যে পরিমাণ গরু বিক্রি হয়েছে, এবার তেমনটি হয়নি। আবার অনেকে গরু কেনার সময় না পাওয়ায় হাটে
ক্রেতার উপস্থিতি কম।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি
করপোরেশনের সর্বোচ্চ ইজারার হাট ধোলাইখাল পশুর হাট। এই হাটে নজরকাড়া দেশী-বিদেশী
অনেক গরু উঠেছে। হাটে যে পরিমাণ গরু রয়েছে, সে তুলনায় বিক্রি কম হচ্ছে। গত শনি ও রবিবার যে পরিমাণ গরু
বিক্রি হয়েছে, সে তুলনায় সোমবার বিক্রি বাড়ে।
এসময় পাশে দাঁড়ানো শরিফুল ইসলাম এক ক্রেতা বলেন, অঢেল টাকা যাদের তারা
ছাড়া কেউ এসব গরু কিনবেও না, দামও জিজ্ঞেস
করবে না। আমরা শুধু বড় গরু দেখে চোখ জুড়ানোর চেষ্টা করছি। অবশ্য গরুর দাম চাওয়ার
পেছনে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকের মজুরি
বৃদ্ধিসহ নানা অজুহাত আছে বিক্রেতার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশ
থেকে শুরু করে দেওয়ানবাগ শরিফ হয়ে গোপীবাগের কিছু এলাকাজুড়ে বসেছে কমলাপুর অস্থায়ী
পশুর হাট। এই হাটে গরু বিক্রি মোটামুটি হলেও আশানুরূপ নয়।
নাটোর থেকে গত
বৃহস্পতিবার ১৪ টি গরু এনেছেন মো. কেতাব আলি। সোমবার পর্যন্ত তার তিনটি গরু বিক্রি
হয়েছে। কেতাব আলি বলেন, দাম জিজ্ঞাসা
করেই চলে যাচ্ছেন ক্রেতা। অনেকে শুধু দেখতেই আসেন। এ বছর গরুর দাম বেশি হওয়াতে অনেকেই
বাজার যাচাই করে গরু কিনবেন। দু/একদিনের মধ্যে বাকি এগারোটা গরু বিক্রি হয়ে যাবে বলে
তার ধারণা।
হাট পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক সিরাজ হোসেন বলেন, শনি ও রবিবারের তুলনায় সোমবার থেকে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। মতিঝিল, কমলাপুর একটা টার্নিং পয়েন্ট। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ধরনের লোক থাকেন। তারা অফিস টাইমে হাটে আসতে পারেন না। এ কারণে এই হাটে দিনের চেয়ে রাতে ক্রেতার সংখ্যা বেশি থাকে। আজ থেকে ক্রেতার উপস্থিতি ও বিক্রি বাড়বে বলে তার ধারণা।
ঐতিহ্যবাহী গাবতলী পশুর
হাটে আগের দুদিনের তুলনায় সোমবার বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। তবে হাটে যে পরিমাণ লোক
এসেছেন, সে তুলনায় বিক্রি কম।
কেননা, ক্রেতার চেয়ে এই হাটে
দর্শনার্থী ও হাট কর্তৃপক্ষের লোকজনের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্যণীয়। যারা গরু কিনছেন,
তারা কাভার্ডভ্যানে করে দ্রুত বাসায় যাচ্ছেন।
এই হাটের উত্তর-পূর্ব
প্রান্তে মহিষ, ছাগল, দুম্বার পসরা বসেছে। গরু ব্যবসায়ীরা কায়দা করতে
পারলেও তেমন চাহিদা না থাকায় বেকায়দায় পড়েছেন মহিষ ব্যবসায়ীরা। লাভজনক বিক্রি তো
নেই বরং চালান তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এমনটি জানিয়েছেন মহিষ বেপারি লোকমান
শেখ।
অন্যদিকে হাটে রয়েছে বেশ কিছু দুম্বা। দুম্বাগুলোর ওজন এক থেকে দুই মণ।
চাহিদা থাকায় ইতোমধ্যে দশটির মতো দুম্বা বিক্রি হয়েছে।
দুম্বার দেখাশোনা করা
মোহাম্মদ রিপন বাবু বলেন, দুম্বাগুলো
গাবতলী হাটের স্থায়ী। এবার ঈদ উপলক্ষে ১৬টি দুম্বা উঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে গত
কয়েকদিনে দশটি দুম্বা বিক্রি হয়ে গেছে। অবশিষ্ট রয়েছে ছয়টি।
গাবতলী পশুর হাটের
ইজারাদার মো. লুৎফর রহমানের ম্যানেজার আবুল হাশেম জানান, সোমবার থেকে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। আশা করছি, আজ আরও কয়েকগুণ বিক্রি বাড়বে।
এদিকে সোমবার সকাল ১০টা থেকে গাবতলী পশুর হাটে কৃত্রিম উপায়ে রাসায়নিক দ্রব্য বা ইঞ্জেকশন ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করা প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। এছাড়া হাটে দালাল, ছিনতাইকারী ও জাল টাকা প্রতিরোধেও কাজ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : কোরবানির হাট কোরবানির পশুর হাট ঢাকা পশু বিক্রি
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh