বাংলা নতুন বছরকে বরণ করলো জবি

মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে প্রতিপাদ্য করে এবং ‘বৈশাখে নূতন করিনু সৃজন, মঙ্গলময় যত তনু-মন’ স্লোগানকে সামনে রেখে পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ উদযাপন করেছে তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক ঘুরে আবার ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় রিকশাচিত্রের পাশাপাশি সংকটাপন্ন প্রাণি প্রজাতির মধ্যে কুমিরের মোটিফ তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও স্থান পেয়েছে লক্ষ্মীপেঁচা, ফুল, মৌমাছি, পাতা, বাঘ এর মুখোশ এবং গ্রামবাংলার লোক কারুকলার নিদর্শনসমূহ স্থান পায়। মঙ্গল শোভাযাত্রাটির আয়োজনের দায়িত্বে ছিল চারুকলা অনুষদ।

শোভাযাত্রা শেষে একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্বরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংগীত বিভাগের পরিবেশনায় সঙ্গীতানুষ্ঠান, নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে মঞ্চায়ন করা হয় ‘প্রতিবাদী মাইকেল’। এছাড়াও জবি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনা এবং জবি ব্যান্ড মিউজিক এসোসিয়েশনের আয়োজনে ব্যান্ড সংগীত পরিবেশিত হয়েছে।

আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া সত্ত্বেও সীমিত অবকাঠামো ও স্বল্প পরিসর নিয়েও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকলের সহযোগিতায় হচ্ছে। বিষবিদ্যায়ের মূল প্রাণ হচ্ছে শিক্ষার্থী, আর এধরণের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতা তুলে ধরতে পারছে। পশ্চিম বঙ্গ, পূর্ব বঙ্গ, পূর্ব পাকিস্তান তারপর বাংলাদেশ এবং এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধুর এই অবদান যেন আমাদের নতুন প্রজন্ম তাদের চিন্তা চেতনায় ধারণ করতে পারে।”

তিনি আরো বলেন, “বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা সবাইকে সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করতে পারি। পারিবারিকভাবেই নারী পুরুষ সমতাকরনে, নারীকে মানুষ ভাবার মানসিকতার শিক্ষা দিতে হবে, নতুন প্রজন্মকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে লিখতে হবে, বলতে হবে।”

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচ তলায় ‘প্রকাশনা প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শনীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ, জার্নাল, সাময়িকী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বার্তাসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রকাশিত গ্রন্থ স্থান পায়।

মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বর্ষবরণ উৎসবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরীসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা,কর্মচারীসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //