পাঁচ দাবিতে জাবিতে মশাল মিছিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, অছাত্রদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিতসহ পাঁচ দাবিতে মশাল মিছিল করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নীপিড়ন বিরোধী মঞ্চের ব্যানারে মশাল মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শুরু করে বটতলা ও নতুন প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো মেনে নেয়ার দাবিতে সেখানে অবস্থান নেয়। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার নিষ্পত্তি করা, নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের অপরাধ তদন্ত করতে হবে এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান এবং মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থানকালে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, ইতোমধ্যে অছাত্রদের বের করার বিষয় একটি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলা হয়েছিলো। তার সময় পেরিয়ে গেছে। অথচ কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার কোনো জবাবদিহিতা দেয়া হয়নি। র‍্যাবের ভাষ্যমতে এই বিশ্ববিদ্যালয় মাদকের আখড়া হয়েছে। এই বাণিজ্য অনেকদিন ধরে চলছে। প্রশাসন এগুলো দেখভাল করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও প্রক্টর ও প্রভোস্ট বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এরকম হলে সামনের ভর্তি পরীক্ষায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাবেন কিনা তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, আজ পর্যন্ত আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরের পর বছর সিট ভাড়া দিয়েও আসন নিশ্চিত করতে পারেন নাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি কোনায় কোনায় সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীদের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই। 

আ র ক রাসেল বলেন, গণরুম বিলুপ্তির জন্য পাঁচ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। প্রশাসন গণরুম বিলুপ্তির নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছে। হল প্রশাসন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা এসকল অবৈধ শিক্ষার্থীদের কক্ষে যায়ই নাই। 

এদিকে এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম। এসময় তিনি আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি মানার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। তবে সিন্ডিকেটের বেধে দেয়া পাঁচদিনের সময়ের মধ্যে আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করতে না পারায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। 

এছাড়া আন্দোলনরতরা আবাসিক হলে অবস্থান করা অছাত্রদের তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্যসহ উপস্থিত প্রশাসনিক শিক্ষকরা তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং আরও কয়েকদিন সময় চান। এক পর্যায়ে আন্দোলনরতরা সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে প্রতিদিন দুই ঘন্টা করে প্রশাসনিক ভবন অবরোধের ঘোষণা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শেষ করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //