রাবিতে ছাত্রদলের ২ নেতাকে মারধর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের দুই নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।

আজ রবিবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ছাত্রদল নেতারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক রাশেদ আলী ও আহবায়ক কমিটির নাফিউল ইসলাম জীবন। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান বাকি। তার সহযোগীরা হলেন- মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াদ, সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সদস্য মুন, দর্শন বিভাগের ছাত্র টিপু সুলতান প্রমুখ।

ভুক্তভোগী ও ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর বাকী ও তার সহযোগীরা শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবনের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। পরে সেখানে নাফিউলকে ডেকে নেয় বাকীর সহযোগীরা। ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেখানে রাশেদ আসেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে নাফিউল ও রাশেদ হামলার শিকার হন। 

ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা রাশেদ আলী বলেন, ছাত্রলীগের এক কর্মী আমাকে ডেকে নিয়ে শহীদুল্লাহ্ কলা ভবনের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে ছাত্রলীগ নেতা বাকী ও তার অনুসারীসহ ১৫ জন আড্ডা দিচ্ছিল। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিল আমাদের সদস্য নাফিউল। তারা আমাকে বসতে বলে ও পরিচয় জানতে চান। আমি উত্তর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা বলে, 'ভাইয়ের মুখে মুখে উত্তর দিস।'  এ বলে আমার ও নাফিউলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা মাটিতে ফেলে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পরে দৌড় দিয়ে আমরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করি।

ছাত্রদল নেতা নাফিউল অভিযোগ করে বলেন, আমি একাডেমিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। ক্যাম্পাসের শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবনের সামনে চায়ের দোকানে বসে ছিলাম। তারপর বাকী একটা ছেলেকে দিয়ে তার কাছে আমাকে ডেকে নিয়ে যান। আমি তাদের সাথে বসার একপর্যায়ে তারা নানা প্রশ্ন শুরু করে ও আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। এমন সময় রাশেদ ভাই আসলে তাকে ও আমাকে বাকী এবং তার সহযোগীরা মারধর করে। এমনকি আমার বাইকের চাবিও তারা রেখে দেয়।

মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকী। তিনি বলেন, ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী ক্যাম্পাসে অবস্থান করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চেয়েছিল। তাদের দুইজনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বাইকের চাবি রেখে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ছাত্রদল নেতাদের একজন বাইকের চাবি রেখে চলে যান। পরে চাবি নিয়ে আমরা প্রক্টর দপ্তরে জমা দিয়েছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক সুলতান আহাম্মেদ রাহী বলেন, আমাদের নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে তারা অপরাধ করেছে। আমরা ছাত্র হিসাবে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারি না। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। প্রশাসন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, আমরা কিছুক্ষণ আগে ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছি। আমাকে কেউ একজন ফোন করে একটা বাইকের চাবি অফিসে জমা দিয়ে গেছেন৷ আমি এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //