অস্বাস্থ্যকর জবির ‘টিএসসি’, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসের পাশেই অবস্থিত কথিত টিএসসির পরিবেশ অপরিষ্কার ও অস্বাস্থ্যকর। বিভিন্ন জায়গার ময়লার স্তূপে বাসা বাঁধছে মশা। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। টিএসসির এ বেহাল অবস্থা ক্ষোভ আতঙ্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আজ বুধবার (১৯ জুলাই) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিএসসির অল্প এই জায়গার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ধরনের ময়লা আবর্জনা। প্রতিনিয়ত ময়লা জমতে জমতে সৃষ্টি হচ্ছে স্তূপ। টিএসসির চারপাশে প্রায় ১৫টির অধিক দোকান থাকলেও দোকানগুলোতে নিয়ে নিজস্ব ডাস্টবিন। এজন্য কলার খোসা, পাউরুটির প্যাকেট, চায়ের পাতিসহ নানা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে যেখানে সেখানে। এছাড়া স্থানটি মাটির হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি বেঁধে থাকে বিভিন্ন জায়গায়। দোকানের ছাউনি পলিথিনের হওয়ায় সেখানেও জমা পানিতে দেখা দিচ্ছে মশার উপদ্রব।

এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খাবারের জন্য একটি মাত্র ক্যাফেটেরিয়া। যেটি প্রায় বিশ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য খুবই অপ্রতুল ব্যবস্থা। এজন্য পাশের টিএসসির দোকানগুলোতে গিয়ে ভিড় জমান তারা। কিন্তু টিএসসির এহেন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। শিক্ষার্থীদের এ ভোগান্তি দেখার যেন কেউ নেই।

এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তমাল ভূঁইয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে আসার কারণে সকালের নাস্তা ক্যাম্পাসে এসে করতে হয়। টিএসসির এরকম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেও বাধ্য হয়ে খেতে হয়। এতে মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ি।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী রুকাইয়া জাহান বলেন, দোকানগুলোর আশেপাশের পরিবেশ খুবই নোংরা। মশা জন্ম নেওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। কোনো দোকানে বসলেই মশা কামড়ানো শুরু করে। ভয়ে আছি যেভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। 

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মুহিবুল্লাহ শেখ জানান, আমরা সুস্থ, সুন্দর স্বাস্থ্যকর একটি পরিবেশ টিএসসিতে আশা করি। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

টিএসসিতে নিয়মিত চা বিক্রি করেন সিরাজ। তিনি বলেন, এখানে ময়লা পরিষ্কার করার কেউ নেই। আমরা নিজেরাই পরিষ্কার করি। চায়ের দোকানের ময়লা কম হলেও খাবারের দোকানের ময়লা বেশি হয়। তারা নিয়মিত পরিষ্কার না করলে ময়লা পানিতে কাঁদা হয়ে যায়।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি না হওয়ায় তাদের কিছুই করার নেই।

এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রহমান মিয়াজী বলেন, আমরা নিয়মিত মশার ওষুধ দিচ্ছি। আমাদের লোকেরা প্রতিদিন ময়লাও পরিষ্কার করছে। তারা নিজেরা যদি নোংরা পরিবেশ করে রাখে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।

২০১৪ সালের হল আন্দোলনের সময় সমবায় ব্যাংকের মালিকানা থেকে জমিটি দখল ক‌রে শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে তারা জায়গা‌টিকে টিএসসি হিসেবে দাবি করে আসছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //