কুবির হলে শিক্ষার্থীর গায়ে হলুদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) হলের ইতিহাসে এবারই প্রথম এক শিক্ষার্থীর গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে। 

আজ বুধবার (১৬ নভেম্বর) শেখ হাসিনা হলের গেইম কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুন নাহার লিলির বিয়ে উপলক্ষে এই গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়।

এ আয়োজনে অংশ নেন লিলির বান্ধবীরা ও  হলের সিনিয়র-জুনিয়র সব শিক্ষার্থী। তার পরিবার থেকে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয় তার ছোট দুই বোন। তবে এই গায়ে হলুদের আয়োজন ছিল খুবই সাদামাটা।

হলের গেইম কক্ষের একটি দেয়ালের সামনে চাদর বসিয়ে ঝোলানো হয় হলুদ-গোলাপী পর্দা, জ্বালানো হয় মরিচবাঁতি। সামনে রাখা হয় কয়েক জাতের ফল আর একটা থালায় সাজিয়ে রাখা হয় বাঁটা হলুদ ও দূর্বাঘাস। গ্রাম-বাংলার চিরায়ত হলুদের মতোই নাঁচ-গানে পুরো আয়োজন করেছেন এই হলের শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রায় সবাই পরিধান করেছিল হলুদ শাড়ি। 

নাইমুন নাহার লিলি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের স্নাতক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের হাতিয়ামুড়ি। তার বিয়ে হচ্ছে একই উপজেলার সৌদি প্রবাসী মাকসুদুর রহমানের সাথে। আগামী শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) পারিবারিকভাবে ধর্মীয় রীতি অনুসারে নিজ বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। 

হলে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের বিষয়ে সদ্য বিয়ের পীড়িতে বসতে যাওয়া লিলি আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, হুট করেই পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়। অল্প সময়ের প্রস্তুতির কারণে বাড়িতে খুব ছোট পরিসরেই অনুষ্ঠান হবে বলে ঠিক হয়েছিল৷ কিন্তু, আমার স্বপ্ন ছিল, আমার বিয়েটা হবে এমন পরিসরে যেখানে বন্ধু-বান্ধব, ক্লাসমেট সবাই উপস্থিত থাকবে৷

তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতির কারণে আমার মনে হয়েছিল আমার এ স্বপ্নটা মনে হয় পূরণ হবে না। তখন আমার রুমমেট কানিজ আপু বললো যে আমরা হলেই তোর হলুদটা দিয়ে দেই। তোর বিয়েতে ফ্রেন্ড এবং ক্যাম্পাসের সবাইকে দাওয়াত দেওয়ার ব্যবস্থা করি। পরে আমার বাকি রুমমেট বুশরা, পারভীন মিলে এ উদ্যোগ নেয়। আপুরা এতোটা আদর-ভালোবাসা দিয়ে এ আবদারটা পূরণ করবে আমি আসলেই ভাবিনি। 

লিলির রুমমেট পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা সুমি বলেন, আমরা আয়োজন করার আগে ভাবিনি, এতো সাড়া পাবো৷ প্রথমে ভেবেছিলাম যে আমরা রুমের সবাই মিলেই ওর হলুদ করবো। পরে যখন হলের আপুদের জানালাম তারা বললো যে তারা যথাসম্ভব সাপোর্ট করবে আয়োজনের জন্য৷ তারপর একদিনের মাঝেই সব প্রস্তুতি নেওয়া হলো৷ অন্য হল থেকে, মেস থেকে মেয়েরা এবং লিলির বন্ধুরা সবাই এসেছে বলেও জানান তিনি৷