ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ফান্ড থেকে সংগঠনটির সম্পাদক এবং সদস্যরা ৯ মাসে সাড়ে ৮৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) চতুর্থ কার্যনির্বাহী সভা শেষে ডাকসু প্রতিনিধিদের ৯ মাসের বিভিন্ন খরচের বিবরণের একটি তালিকা আসে গণমাধ্যমের কাছে।
এতে দেখা যায়, ৮ সম্পাদক এবং ৯ সদস্যসহ মোট ১৭ জন উত্তোলনকৃত টাকা বিভিন্ন প্রোগ্রামে ব্যয় করেছেন।
তবে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও ভিপি নুরুল হক নুরের হিসাবের বিবরণ দেয়া হয়নি। তবে নুর দাবি করেছেন, তিনি চেষ্টা করেও তার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ তুলতে পারেননি।
ওই তালিকায় দেখা গেছে, ৯ মাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও উদ্যোগের খরচ হিসাবে তহবিল থেকে ৮৩ লাখ ৫১ হাজার ৩০৪ টাকা উত্তোলন করেছেন ডাকসু সম্পাদক এবং সদস্যরা। এ ছাড়াও ডাকসু কার্যালয় ব্যবস্থাপনা খাতে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৩০ মে ডাকসুর জন্য আলাদা বাজেট ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
প্রকাশিত খরচের তালিকা থেকে জানা গেছে, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী পেয়েছেন ১০ লাখ। এর মধ্যে তিনি খরচ করেন ৭ লাখ ৮২ হাজার ১২০ টাকা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আরিফ ইবনে আলী পেয়েছেন ১৫ লাখ। তিনি খরচ করেছেন ৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহরিমা তানজীন অর্ণি পেয়েছেন ১৫ লাখ টাকা। তিনি খরচ করেছেন ৬ লাখ ৭১ হাজার ৯০০ টাকা। সাহিত্য সম্পাদক মাযহারুল কবির শয়ন পেয়েছেন ১৫ লাখ টাকা। তিনি খরচ করেছেন ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৩৪ টাকা। সংস্কৃতি সম্পাদক আসিফ তালুকদার পেয়েছেন ১৫ লাখ টাকা। তিনি খরচ করেছেন ১২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ পেয়েছেন ২০ লাখ। তিনি খরচ করেছেন ১৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা। সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন পেয়েছেন ১৩ লাখ। তিনি খরচ করেছেন ৪ লাখ ৫০ হাজার। ছাত্র পরিবহন সম্পাদক শামস-ঈ-নোমান পেয়েছেন ১৫ লাখ। খরচ করেছেন ৫৮ হাজার ৭০০ টাকা। এছাড়াও ডাকসু কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা খাতে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
ডাকসুর সদস্যদের মধ্যে তহবিল থেকে তানভীর হাসান ৯০ হাজার টাকা, রাকিবুল হাসান ৬১ হাজার ৭০০ টাকা, রাইসা নাসের ৭৪ হাজার ৫০ টাকা, রকিবুল ইসলাম ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, মাহমুদুল হাসান ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা, রফিকুল ইসলাম ৩০ হাজার টাকা, ফরিদা পারভীন ৬১ হাজার ৫০০ টাকা, সাইফুল ইসলাম ১ লাখ টাকা এবং যোশীয় সাংমা ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। সদস্যদের জন্য আলাদা কোনো বাজেট ছিল না। এই টাকা তারা তুলেছেন সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানির তহবিল থেকে।
তবে প্রকাশিত ব্যয়ের হিসাবপত্রে ফান্ড থেকে ভিপি এবং এজিএসের টাকা উত্তোলনের কোনো বিবরণ নেই। বাজেটে এজিএসের জন্য কোনো বরাদ্দ ছিল না। তবে ভিপি নুরুল হক নুর দাবি করেছেন, তার জন্য বরাদ্দকৃত ৫ লাখ টাকা তিনি উত্তোলন করতে পারেনি।
ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, নুর টাকা চেয়ে পায়নি, এটা আমাকে তো কোনোদিন বলেনি। তবে ব্যক্তিগত বিষয়ে যেটা চেয়েছিল, ডাকসুর টাকা তো কারো সাইকেল কিনে দেয়ার জন্য নয়।
প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভিপি, জিএস ও এজিএস এক টাকাও উত্তোলন করেননি। বিভিন্ন সম্পাদক ও সদস্যদের মাধ্যমে তারা টাকা উত্তোলন করেছেন এবং প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করে তার ভাউচার দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ডাকসু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh