১৫৩ কোটি টাকার অবৈধ ভ্যাট সুবিধা ৪ কোম্পানিকে

চার মোবাইল ফোন অপারেটরকে প্রায় ১৫৩ কোটি টাকার অবৈধ ভ্যাট সুবিধা দিয়েছে আদায়কারী সংস্থা ভ্যাট এলটিইউ (বৃহৎ করদাতা ইউনিট)। ফোন অপারেটরগুলো হলো- গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও এয়ারটেল।

নির্ধারিত সময়ে ভ্যাটের দায় শোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিগুলোর ওপর ১৫২ কোটি ৮০ লাখ টাকার সুদ প্রযোজ্য হয়েছিল। সেটি আদায় না করে ভ্যাট এলটিইউ কোম্পানিগুলোকে মাফ করে দেয়।

এনবিআরের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভ্যাট আইনে তা মাফযোগ্য নয়। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, এই অবৈধ সুবিধা দেওয়ার সময় ভ্যাট এলটিইউর কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী। তিনি এখন অবসরকালীন ছুটিতে (পিআরএল) আছেন। পুরো দায় তার ওপর আসায় এনবিআর আরো অনুসন্ধানের স্বার্থে একজন সদস্য ও দুজন কমিশনারকে দিয়ে আরেকটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করেছে। ওই কমিটিকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও এয়ারটেল ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বড় অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকি দেয় বলে ভ্যাট এলটিইউ দাবি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষের মধ্যে দেনদরবার হয়। একপর্যায়ে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বা এডিআরের মাধ্যমে ফাঁকির অভিযোগে ধার্য করা রাজস্বের ১৮৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা পরিশোধ করতে সম্মত হয় কোম্পানিগুলো। পরে তারা ওই ভ্যাট পরিশোধও করে। কিন্তু দাবি করা ভ্যাট নির্দিষ্ট সময়ে জমা না দেওয়ায় এর বিপরীতে সুদ প্রযোজ্য হয় ১৫২ কোটি ৮০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি তখনকার কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর এখতিয়ারভুক্ত হলেও তিনি তা আদায় করেননি; বরং তিনি উল্টো যুক্তি দেখিয়ে কোম্পানিগুলোকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ছাড় দিয়েছেন। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ভ্যাট এলটিইউর অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুণ্ডু গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রতিবেদন দিয়েছি। প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ১৬টি ফাইলেই ভ্যাটের ওপর ধার্য সুদ কেন মাফ করা হলো, তা দেখা ছিল আমাদের কাজ। আমরা চার সদস্য মিলে ভ্যাট আইনের আলোকে তা পর্যালোচনা করেছি। এতে দেখা যাচ্ছে, সুদ মওকুফ করা হয়েছে। মওকুফের পক্ষে কতগুলো যুক্তি দেওয়া হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে, ভ্যাটের সুদ মওকুফের জন্য যুক্তিগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। আইনে সুদ মওকুফের কোনো সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, আইনে যেহেতু সুদ মওকুফের কোনো বিধান নেই, স্বাভাবিকভাবেই তা আদায় হবে।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান গণমাধ্যমকে বলেন, এনবিআর কখনো এভাবে আমাদেরকে সুদ মওকুফ করেছে বলে জানা নেই। এটা কোর্টে মীমাংসা হয় অথবা এডিআরের মাধ্যমে হয়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত না দেখে বলা যাবে না। যদি এডিআরের মাধ্যমে হয়ে থাকে, তাহলে এটা উভয় পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই হয়েছে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //