৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতি কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে গত চার মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। যা গত আট অর্থবছরের একই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছর এর চেয়ে কম হারে বাস্তবায়নের রেকর্ড রয়েছে। ওই অর্থবছর বাস্তবায়নের হার ছিল ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। 

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

আইএমইডির প্রতিবেদন বলছে, গত অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে এডিপির আওতায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ছিল ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ব্যয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৬৬ কোটি টাকা কম। গত চার মাসে ব্যয় হয়েছে ৩১ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল প্রায় ৩২ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। 

গত বৃহস্পতিবার আইএমইডির ওয়েবসাইটে এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, একক মাসের হিসাবেও গত অক্টোবরে এডিপি বাস্তবায়নের হার কমেছে। গত মাসে বাস্তবায়নের হার ৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। গত বছরের অক্টোবরে যা ছিল ৪ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। 

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুরের মতে, সরকারের অর্থ সংকটের কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এই স্থবিরতা। তিনি বলেন, প্রকল্পে সরকারের অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না বলে প্রকল্প সাহায্যের বাস্তবায়নেও গতি কমেছে। কারণ ভূমি অধিগ্রহণের মতো কাজগুলো সরকারকে করে দিতে হবে। উন্নয়ন সহযোগীরা ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয়ে ঋণ দেবে না। সরকারের অর্থের টানের কারণে ভূমি অধিগ্রহণের মতো ব্যয়ে অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার মৌসুমি একটা ব্যাপারও আছে। অবশ্য পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের মতো মেগা অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কারণে হাতে বড় ব্যয়ের প্রকল্প কম। নতুন মেগা প্রকল্পও নেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের এই স্থবিরতার কারণে কর্মসংস্থান কাঙ্ক্ষিত হারে হবে না। অর্থের সরবরাহ কমবে। সার্বিক অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। 

সাধারণত প্রতি অর্থবছরেই আগের অর্থবছরের তুলনায় এডিপির আকার বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছর এডিপি বরাদ্দ গত অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। মোট আকার ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। ১ হাজার ৩৪০টি প্রকল্পের বিপরীতে এ বরাদ্দ রয়েছে। 

আইএমইডির প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত চার মাসে প্রকল্প সাহায্যের বাস্তবায়নের হার ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। গত চার মাসে বিদেশি ঋণের এই উৎস থেকে প্রকল্পগুলোতে ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //