চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতের ট্রানজিট পণ্য

ভারতের সাথে ট্রানজিট চুক্তি অনুসারে আর দুইটি পরীক্ষামূলক পণ্য চালান বাকি রয়েছে। এদের মধ্যে একটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। 

গতকাল মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে ট্রানজিটের এক কনটেইনার পণ্যসহ (রড) বাংলাদেশি জাহাজ এমভি ট্রান্স সামুদেরা চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটিতে ভিড়েছে বলে জানা গেছে। বন্দরের শক্তিশালী ‘টাগ কাণ্ডারি-১১’ জাহাজটিকে বার্থিংয়ে সহযোগিতা করেছে।

এমভি ট্রান্স সমুদেরার শিপিং এজেন্ট ম্যাঙ্গো লাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, কলকাতা বন্দর থেকে মোট ১২৪ একক আমদানি পণ্যবোঝাই করে জাহাজটি গতকাল রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে। এরমধ্যে একটি কনটেইনারে ট্রানজিট পণ্য আছে। বাকি কনটেইনারে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আমদানি করা পণ্য রয়েছে।

এর আগে, গত রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে কলকাতার শ্যামপ্রসাদ মূখার্জি বন্দর ছেড়ে আসে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ট্রানজিট পণ্যভর্তি কনটেইনারটি বন্দরের বিশেষ তত্ত্বাবধানে রাখা হবে। কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সেটি সড়কপথে শ্যাওলা (সিলেট)-সুতারকান্দি (ভারত) স্থলবন্দরের মাধ্যমে ভারতের আসামে নেওয়া হবে।

এছাড়া চলতি সপ্তাহে মেঘালয় থেকে চায়ের কনটেইনার ডাউকি (ভারত)-তামাবিল (বাংলাদেশ) হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কলকাতা বন্দরে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এটি ট্রানজিটের পরীক্ষামূলক শেষ চালান।

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য সরবরাহ করতে ২০১৮ সালের অক্টোবরে চুক্তিবদ্ধ হয় ভারত-বাংলাদেশ। এরপর ২০২০ সালের জুলাইয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় প্রথম পরীক্ষামূলক চালান। এরমধ্য দিয়েই সূচনা হয় নতুন এক দিগন্তের।

প্রথম পরীক্ষামূলক চালানটির মাধ্যমে ৬৯৪ ডলার বা ৫৮ হাজার ৮৯৯ টাকা আয় করে চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমস। এছাড়া পণ্য পরিবহন করে বেসরকারি খাতে আয় হয় দুই লাখ ৭২ হাজার টাকা।

চালানটিতে কলকাতা বন্দর থেকে চারটি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি সেঁজুতি’। এর মধ্যে দুটি কনটেইনারে ছিল টিএমটি স্টিল বার, যা পরে স্থলপথে ভারতের ত্রিপুরায় যায়। বাকি দুই কনটেইনারে ছিল ডাল, যা ভারতের আসামে নেওয়া হয়।

ট্রানজিটের পণ্য পরিবহন করে তিন খাতে আয় করবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে প্রথমটি হলো পণ্য পরিবহনে নানা ধরনের মাশুল ও খরচ। দ্বিতীয়টি হলো বন্দরের সেবা মাশুল। তৃতীয়টি হলো, দেশীয় যানে ট্রানজিট পণ্য পরিবহন। এছাড়া সমুদ্রপথে দেশীয় কনটেইনার জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহনের ফলেও লাভবান হবেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের মতে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে পরীক্ষামূলক চালান আনা-নেওয়ার বিষয়টি গৌরবের ব্যাপার। এতে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশ উপকৃত হবে। বন্দরের ফি, কাস্টমসের শুল্ক আহরণ বাড়বে, ট্রানজিট পণ্য পরিবহনে ভাড়া পাবে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //