কর্মীদের কল্যাণে ইউনিলিভারের নতুন ২ নীতি

দেশের অন্যতম বৃহত্তম নিত্যব্যবহার্য পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) কর্মীদের কল্যাণার্থে নতুন দুইটি বিশেষ ও অগ্রগামী নীতি বাস্তবায়ন করেছে।

নতুন এই নীতি দুইটি হলো- অসুস্থতাকালীন সময় কর্মী এবং তার পরিবারের সদস্যদের জন্য বাড়িতেই স্বাস্থ্য পরিচর্যাসেবা (কেয়ারগিভার সার্ভিস) গ্রহণের সুযোগ এবং বার্ষিক ছুটির সাথে পরিবর্তনযোগ্য সরকারি ছুটি এক অপরের সাথে সমন্বয় করার সুযোগ প্রদান।

উদ্যোগটি ইউনিলিভারের বৈচিত্র্যময় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মক্ষেত্র তৈরির দর্শনের সাথে সম্পৃক্ত, যেখানে প্রতিটি কর্মীর মর্যাদা ও প্রয়োজনীয়তাকে সম্মান দেয়া হয়; যাতে তারা কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতার সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেন।

এ বছর ইউনিলিভার আরো দুইটি অগ্রগামী ও লিঙ্গ-নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করেছে। সেগুলো হলো- “প্রিভেনশন অন সেক্সুয়াল হ্যারেসমেন্ট’ এবং ‘সাপোর্ট সারভাইভার্স অব এবইউজ’। অন্তর্ভুক্তিমূলক কাজের পরিবেশ বজায় রাখা এবং কর্মীদের যেকোনো ব্যক্তি বা দলগত হয়রানি থেকে রক্ষা করতে এই নীতিগুলো বাস্তবায়ন করা হয়।

কর্মীবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউনিলিভার অনুধাবন করেছে যে, অতিমারিকালে এই মানবিক সংকটময় পরিস্থিতি, সমাজে একটি অসম বাস্তবতা তৈরি করতে পারে। তাই কর্মীদের শুধু শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করা নয়, বরং মানসিক ও অনুভূতির সুরক্ষা নিশ্চিত করাও এখন গুরুত্বপূর্ণ।

 ইউনিলিভারের “কেয়ারগিভার সার্ভিস পলিসি” অনুসারে, কর্মীরা তাদের পরিবারের সন্তান, বয়োজ্যেষ্ঠ কিংবা অসুস্থ সদস্যদের যত্নের জন্য স্বল্প খরচে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত পরিচর্যাকারী রাখতে পারবেন। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- জরুরি প্রয়োজনে ইউনিলিভারের কর্মীদেরকে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য করা, যাতে কর্মক্ষেত্র এবং বাসায় তারা তাদের  কাজে পারদর্শিতা প্রদর্শনের সুযোগ পান।

যেসব কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, প্রশিক্ষিত পরিচর্যাকারী ও সরকার স্বীকৃত সেবিকারা তাদের সেবা প্রদান করবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ইউনিলিভারের কর্মীরা বাসায় কিংবা হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীর যত্ন, নার্সিং হোমকেয়ার সেবা, ফিজিওথেরাপি, মানসিক পরিচর্যাসহ আয়া সেবার সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

ইউনিলিভার বাংলাদেশে গৃহীত নতুন দুই নীতির দ্বিতীয়টি বাস্তবায়নের ফলে সরকারি ছুটি সমন্বয়ের সুযোগ তৈরি হলো। এর ফলে একে অপরের সাথে পরিবর্তনযোগ্য সরকারি ছুটি গ্রহণের ক্ষেত্রে ইউনিলিভারের বার্ষিক ছুটির সাথে পরিবর্তন বা একীভূত করার সুযোগ পাবেন ইউনিলিভার কর্মীরা। এতে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় ছুটিগুলোতে ব্যক্তি বিশেষের প্রয়োজনে সামঞ্জস্যতা আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

ধর্ম, সংস্কৃতি ও জাতীয়তাভেদে ইউনিলিভারের কর্মীরা- লক্ষ্মী পূজা, মাঘী পূর্ণিমা, ইস্টার সান ডে ইত্যাদির মতো উৎসব উদযাপন করেন। এসব ছুটি কোম্পানিটির বার্ষিক ছুটির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়। 

নতুন নীতি প্রসঙ্গে ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাভেদ আখতার বলেন, “সদ্য গৃহীত বিশেষ নীতি দুইটিকে আমরা আন্তরিকভাবেই স্বাগত জানাই। কেননা, এটি আমাদের কর্মীদের ক্যারিয়ারের প্রতিটি ধাপে সমতা বিধান নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে ইউনিলিভারের প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ। সব কর্মীর জন্য সমতাভিত্তিক কর্মপরিবেশ তৈরি করার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে বৈচিত্র্যতা এবং অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতের প্রচেষ্টা রয়েছে আমাদের।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা এমন একটি কর্মক্ষেত্র তৈরি করতে চাইছি, যেটি আমাদের একাত্মতার মূল্যবোধ বহন করবে এবং যেখানে কর্মীদের সবাইকে সঠিকভাবে মূল্যায়নের পাশাপাশি সবার সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত হবে।”

এ বিষয়ে আলোকপাত করে ইউনিলিভার বাংলাদেশের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক সাকসী হান্ডা বলেন, “আমাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্রে মূলত কর্মীদের সুকল্যাণ নিশ্চিতের বিষয়টি প্রোথিত। তাদের জন্য সুষম, বৈচিত্র্যপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মক্ষেত্র তৈরিতে ইউনিলিভার বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

তিনি আরো বলেন, কোম্পানির “কোড অব বিজনেস প্রিন্সিপাল” অনুসারে “সম্মান, আত্মমর্যাদা ও যথার্থ আচরণ”- এ বিষয়গুলো আমাদের মজ্জাগত। বস্তুত ইউনিলিভার এমন একটি কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেটি মানবাধিকার ও সমানাধিকার রক্ষায় উপযোগী।

সাকসী হান্ডা বলেন, “সুন্দর আগামীর জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই ইউনিলিভার বাংলাদেশ তার কর্মীদের কল্যাণ ও কর্মক্ষেত্রে সমতা বিধানে নতুন এই অগ্রগামী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিগুলো সন্নিবেশিত করেছে।”

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নিত্যব্যবহার্য পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যারা ৫৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে এদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের প্রতি ১০টি পরিবারের ৯টিই তাদের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা মেটাতে উক্ত প্রতিষ্ঠানের এক বা একাধিক পণ্য ব্যবহার করে থাকে। লাক্স, লাইফবয়, সার্ফ, ক্লোজআপ, সানসিল্ক, পন্ডস, ভ্যাসলিন, ডাভ, তাজা, পিওরইটসহ ২৪টিরও বেশি ব্র্যান্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের কোটি মানুষের প্রাত্যাহিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল)। ইউবিএল, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মোড়কজাত পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভারের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ইউনিলিভার সারা বিশ্বে ১৯০টিরও বেশি দেশে মোড়কজাত পণ্য সরবরাহ করে থাকে। টেকসহ জীবনমান নিশ্চিত করার মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণ করা ইউবিএল এর লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি বাংলাদেশে টেকসই সমাজ তৈরিতে প্রভাব রেখে চলেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল)।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //