চলতি অর্থবছরে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ বিলিয়ন ডলার

চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত অর্থবছরের (২০১৯-২০২০) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ বিলিয়ন ডলার কম। 

তবে গত অর্থবছরের রফতানি আয়ের চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

এদিকে সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে (২০১৯-২০২০) রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৫ দশমিক ২৮ শতাংশ কমেছে। প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে রফতানির এ লক্ষ্যমাত্রার কথা জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৫৪ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। তাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কথা বিবেচন করে চলতি অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে পণ্য খাতে রফতানির টার্গেট ৪১ বিলিয়ন এবং সার্ভিস সেক্টরে ৭ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। যে রফতানি আয় নির্ধারণ করেছি সেটা আমার অর্জন করতে পারবো বলেন তিনি।

টিপু মুনশি বলেন, এবার অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রার ৬ বিলিয়নই আসবে পোশাকখাত থেকে। বাকি ২ বিলিয়ন অন্যান্যখাত থেকে। দেশীয় বাস্তবতা, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সঠিক নীতি অনুসরণ ও সময়ানুগ বাস্তবায়ন পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা ঘোষিত এ রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো।

তিনি বলেন, এবার ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে নতুন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়। এবার পণ্যখাতে ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ৪১ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় ধার্য করা হয়। সেবা খাতের রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ ধরে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া তৈরি পোশাকখাতের প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ২২ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

চলতি বছরের ডিসেম্বর শেষে করোনার প্রভাব কমে আসবে- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ২০২১ সালের মধ্যেই প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশ রফতানির বড় ক্রেতা হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকা। এসব দেশগুলো বছরের শেষ প্রান্তিকে চাহিদা বাড়তে থাকবে। ফলে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের রফতানিখাতও ঘুরে দাঁড়াবে। 

টিপু মুনশি দাবি করেন, পোশাক খাতে বহুমুখীকরণ হবে। বিশ্ব চাহিদা ও সরবরাহ চেইনের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে আগামীতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ বাড়বে। বিশেষ করে আইটি খাতে দেশি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে, ই-কমার্সের প্রসার ঘটবে এবং দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে আইটির ব্যবহার বাড়ার ফলে আমাদের রপ্তানিও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বিদায়ী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে প্রত্যাশিত আয় না হওয়ার কারণও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এটা বাংলাদেশের একার সংকট নয়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বেশ যৌক্তিক কারণেই এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

তিনি জানান, বিশ্ব বাণিজ্যে করোনার নেতিবাচক প্রভাবের ফলে মার্চে ১৮.১৯ শতাংশ, এপ্রিলে ৮২.৮৫ শতাংশ ও মে মাসে ৬১.৮৭ শতাংশ কম হয়েছে। জুন মাসেও আয় কমার ধারাবাহিকতা ২.৫ শতাংশে ছিল। এসব কারণেই লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।

অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যেখানে যে ধরনের নীতিসহায়তা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করার কথা বলেন। একই সঙ্গে পণ্যের বহুমুখীকরণ, নতুনবাজার সৃষ্টি ও গুণগতমানে নজর রাখারও পরামর্শ দেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বেসরকারিখাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই'র প্রথম সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ ব্যবসায়ী নেতারা সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব ড. জাফরউদ্দিন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //