এবার ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কের ১৫৫ স্থানে হতে পারে যানজট

এবারের ঈদযাত্রায় সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কে ১৫৫টি স্থানে যানজটের আশঙ্কা করছে হাইওয়ে পুলিশ। এসব স্থানে যানজটের কারণ চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য কয়েকটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ ) রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় যানজটের সম্ভাব্য এসব স্থান তুলে ধরা হয়।

যানজটের সম্ভাব্য স্থানগুলোর মধ্যে ঢাকা-উত্তরবঙ্গের সড়কে রয়েছে ৫২টি, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৪৮, ঢাকা-সিলেট সড়কের ৪১, ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা সড়কের ৮ এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে ৬টি স্থানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ যানজটের এসব সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করেছে।

হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ওই সব স্থানে যানজট হওয়ার কারণ, বাসস্ট্যান্ড-বাস কাউন্টার থাকা, যাত্রী ওঠানামা, মহাসড়কের পাশে বাজার, ইউ টার্ন থাকা, টোল আদায়ে ধীরগতি, রাস্তা দিয়ে পথচারী পারাপার, ওজন মাপা এবং সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ চলমান থাকার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়। 

সভায় এসব স্থানকে ঈদের আগে ও পরবর্তী সময়ে তদারকির আওতায় রাখতে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের ৫২টি স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— বাইপাইল মোড়, চন্দ্রা মোড়, গোড়াই মিলগেট, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম গোলচত্বর, কোনাবাড়ী আন্ডারপাস, হাটিকুমরুল গোলচত্বর ও বাজার, সিরাজগঞ্জ বাইপাস, বগুড়া বাজার থেকে সীমাবাড়ি কলেজ প্রভৃতি। এর মধ্যে বাইপাইল ও চন্দ্রায় যানজটের কারণ হিসেবে বলা হয়, উত্তরবঙ্গগামী বাস ও ট্রাকে যাত্রী ওঠানো। আর গোড়াই মিলগেটের কারণ হিসেবে ঈদের সময় তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের একত্রে ছুটি হলে যাত্রীর চাপ বাড়ার কথা উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে ৪৮টি স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কাঁচপুর সেতুর পূর্ব ঢাল, মদনপুর মোড়, সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড, মেঘনা টোল প্লাজা, দাউদকান্দি টোল প্লাজা, চৌদ্দগ্রাম বাজার, বিসিক মোড়, বাড়বকুণ্ড বাজার, ছোট কুমিড়া, মীরসরাই, বারইয়ারহাট বাজার প্রভৃতি। এই সড়কে একাধিক টোল প্লাজা, ইউ টার্ন, মহাসড়কের পাশে বাজার, রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো, যেখানে-সেখানে রাস্তা পারাপারের মতো বিষয়গুলোকে যানজটের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা-সিলেট সড়কে ৪১টি স্থানের মধ্যে তারাব, রূপসী, বরাব, বরপা বাসস্ট্যান্ড, সুলতানা কামাল সেতু, ভূলতা মোড়, ইটাখোলা মোড় ও শেরপুর টোল প্লাজা রয়েছে। যানজট মোকাবিলায় পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য মোতায়েন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা সড়কে ৮টি স্থানে এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের ৬টি স্থানে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। তবে হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙা সড়কে যানজট সৃষ্টি কিংবা প্রতিবন্ধকতার আশঙ্কা নেই।

এদিকে ঈদের দিনসহ আগের সাত দিন ও পরের পাঁচ দিন সার্বক্ষণিক (২৪ ঘণ্টা) সিএনজি গ্যাস ও জ্বালানি বিক্রির (পেট্রল-ডিজেল-অকটেন) ফিলিং স্টেশন খোলা রাখার প্রস্তাব করা হয়। এর বাইরে মহাসড়ক ও করিডরগুলোতে ঈদের সময় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ না করা, তৈরি পোশাক কারখানার কর্মীদের পর্যায়ক্রমে ছুটির ব্যবস্থা করা, পণ্য পরিবহনের গাড়িতে যাত্রী বহন না করার বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়।

পরিবহনমালিক ও শ্রমিক নেতাদের প্রতিনিধিরা বলেন, ঈদের সময় বাস থেকে চাঁদাবাজি বেড়ে যায়। চাঁদাবাজির কারণে বাসমালিকেরাও যাত্রীসাধারণের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। চাঁদাবাজি বন্ধ করা গেলে যাত্রীরাও নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রা করতে পারবেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //