বিজয়ের উল্লাসে সেজেছে ঢাকা

রাত পোহালেই মহান বিজয় দিবস। ১৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল ও স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন। বাংলাদেশ পা দেবে ৫৩ বছরে। বাঙালি জাতি গৌরবোজ্জ্বল এই দিনকে উদযাপনের জন্য লাল-সবুজের রঙে সেজেছে রাজধানী ঢাকা। রাতের এই দৃশ্য বিজয় দিবসের প্রাক্কালে বাঙালির জাতীয় চেতনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

আজ শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) ছুটির দিন সন্ধ্যার পর রাজধানীতে ঘুরে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোয় জাতীয় পতাকার আদলে আলোর প্রোজ্জ্বল করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ ভবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থার সদর দপ্তর-কার্যালয় সাজানো হয়েছে নানা রঙে। বেসরকারি বিভিন্ন ভবনেও লাল-নীল আলো জ্বালানো হয়েছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক ভবনের পাশাপাশি বাসা-বাড়িও রয়েছে।

অনেক সড়ক লাল-নীল ঝাড়বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। কোথাও সড়কদ্বীপ, কোথাও সড়কবাতি ঝলমল করছে। কোথাও আবার লাল-নীল আলোর মাঝে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল ছবি শোভা পাচ্ছে, কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি জ্বলমল করছে।

মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর ভোরে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।

বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ ফুল দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

দিনটিতে সরকারি ছুটি। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলোকে জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদক দল বাদ্য বাজাবেন।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রগুলোয় প্রকাশ করা হবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক মিডিয়া মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।

বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় পর্যায় এবং জেলা-উপজেলায় ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোয় দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু বিকাশ কেন্দ্রসহ এ রকম বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। দেশের সব শিশু পার্ক ও জাদুঘরে বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হবে।

এদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ ও ভূগর্ভস্থ জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ও পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //