পুষ্টি বিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে ইউনিসেফ ও বাংলাদেশ সরকার

মা ও কিশোরীদের পুষ্টি উন্নয়নে কাজ করছে সরকার

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর ) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মা ও কিশোরীদের পুষ্টি বিষয়ক জাতীয় সম্মেলন। এ সময় সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া কর্মসূচীর আওতায় সারাদেশের সকল মা ও কিশোরীদের পুষ্টি পরিষেবা নিশ্চিতে লোকবল বাড়ানোর পাশপাশি অধিকহারে বিনিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। 

"ফেড টু ফেইল" শীর্ষক ইউনিসেফের ‘বৈশ্বিক শিশু পুষ্টি প্রতিবেদন ২০২১’ অনুযায়ী দেখা গেছে, বাংলাদেশ পাঁচ বছরের কম বয়সী খর্বাকৃতির শিশুদের অনুপাত ৪০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পথে রয়েছে। আর এই ধারা অব্যাহত রাখতে কিশোরী ও মায়েরা যাতে পর্যাপ্ত পুষ্টি পরিষেবা পায় তা নিশ্চিত করা জরুরী বলেও আলোচনা করা হয় সম্মেলনে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মেয়ে ও নারীদের পুষ্টিগত অবস্থার মান উন্নয়নে কাজ করছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়। পুষ্টিহীনতার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ দুর্বলের সঙ্গে গর্ভাবস্থা ও প্রসবকালীন ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেন, “আমরা বর্তমানে পঞ্চম স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাত কর্মসূচি তৈরি করছি যা ২০২৪ সাল থেকে শুরু হবে। আমরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য বিনিয়োগ বাড়াব এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া পুষ্টি ও স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষে পুষ্টি বিষয়ক চলমান উদ্যোগগুলোকে জোরদার করতে পর্যাপ্ত তহবিল বরাদ্দ দিব।”

সম্মেলনে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, "মা এবং অল্প বয়সী মেয়েদের জন্য সঠিক পুষ্টি নিশ্চিতের জন্য বিনিয়োগের অনেক অর্থনৈতিক সুফলও রয়েছে  এবং তা বিভিন্ন সময়ে প্রমানিত।  আজ এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত  বিনিয়োগ  করলে, তা আগামী কয়েক দশক ধরে ভবিষ্যত প্রজন্মের উৎপাদনশীলতা ও সার্বিক কল্যাণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে, অপর্যাপ্ত  পুষ্টির সঙ্গে জড়িত হচ্ছে শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধকতা, যা আগামী প্রজন্মের জন্য জীবনভর দুঃখকষ্ট ও  দারিদ্র্যের কারণ হতে পারে। বাংলাদেশ বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। এই অগ্রগতি বজায় রাখতে যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ও বয়ঃসন্ধিকালীন পুষ্টি পরিষেবার ঘাটতিগুলো মোকাবিলা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা মেয়ে ও গর্ভবতী নারীদের কম ওজনের শিশু জন্ম দেওয়ার ঝুঁকি বেশি মাত্রায় থাকে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৬ লাখ ৪ হাজার শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আর এসব শিশুদের প্রায় ২৮ শতাংশ অপুষ্টি ও দারিদ্র্যের আন্তঃপ্রজন্মীয় চক্রের মধ্যে পড়ে যায়।

এদিকে মা ও কিশোরীরা যাতে প্রয়োজনীয়  সকল পুষ্টি পরিষেবা সময়ানুযায়ী পেতে পারে  সেলক্ষ্যে বিভিন্ন ‘ফ্ল্যাগশিপ’ পুষ্টি কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউনিসেফ বাংলাদেশ, সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বলেও জানিয়েছে ইউনিসেফ কর্তৃপক্ষ। 

উল্লেখ্য, ইউনিসেফের সহায়তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //