‘গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা অপরিহার্য’

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা অপরিহার্য।

আগামীকাল সোমবার (২১ আগস্ট) উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস দেশের চলমান গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে সকল রাজনৈতিক দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘২১ আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি শোকাবহ ও ভয়াল হত্যাযজ্ঞের দিন। ২০০৪ সালের এ দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভায় বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় শহিদ হন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী। আমি ২১ আগস্টের সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা।’

তিনি বলেন, লাখো শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মহান স্বাধীনতা।  ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ‘৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ‘৬৬ এর ৬-দফা,’ ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ‘৭০ এর নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে স্বৈরশাসকের বুলেটের আঘাতে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ওপর প্রথম আঘাত আসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সেদিন স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে অকালে জীবন দিতে হয়েছে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ পরিবারের সদস্যদের। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। এরপরও ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকচক্র থেমে থাকেনি। তারা পরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভা চলাকালীন ইতিহাসের বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালায়।

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও শহিদ হন দলের ২৪ জন নেতাকর্মী। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মীসহ অনেকে। এ হামলায় বেঁচে থাকা অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করে, সারা শরীরে স্পিন্টার নিয়ে আজও দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। ঘাতকচক্রের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বহীন করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে রুখে দেওয়া এবং দেশে স্বৈরশাসন ও জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তা হতে দেয়নি। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। ফলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণ একটি আত্মমর্যাদাশীল ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করবে- এ প্রত্যাশা করি।’

তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //