প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে আমরা এমনভাবে গড়ে তুলবো যাতে বিশ্বের কাছে কোনো বাঙালিকে আর মাথা নিচু করে চলতে না হয়। দেশের সম্প্রতিক উন্নয়ন অগ্রগতিকে আলোর পথের যাত্রা আখ্যায়িত করে একে অব্যাহত রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, সমগ্র জাতির কাছে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে আমার আহবান থাকবে, অনুরোধ থাকবে, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাধীন এদেশকে আমরা এমনভাবে সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলবো যাতে বাঙালি জাতিকে আর বিশ্বের কারো কাছে মাথা নত করে চলতে না হয়। আমরা উন্নত-সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করেই এগিয়ে যাবো।
তিনি বলেন, আলোর পথের এই যাত্রা অব্যাহত থাক, বাংলাদেশের মানুষ সুখী সমৃদ্ধ ও উন্নত জীবন লাভ করুক।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সকালে ৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানের মাঝে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ প্রদানকালে ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি তার তেজগাঁও কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থেকে এ পুরস্কার বিতরণ করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, যে জাতি নিজের মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত দেয়, স্বাধীনতার জন্য বুকের রক্ত দিয়ে যায়, সে মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারে না, সে কথা বলে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে। আমিও তা বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, অনেক চড়াই উৎড়াই পার হয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি সে যাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা ধরে রেখে এর সুফল প্রত্যেক ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব, এটাই আমাদের লক্ষ্য এবং সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির মন্দাভাব ও দেশে দেশে খাদ্য সংকট থাকলেও আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পারায় সরকারের সাফল্যেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, দেশে বেসরকারি খাতে গণমাধ্যমকে ছেড়ে দেয়ায় এর অবাধ স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে অনেক ছোটখাটো বিষয়ও সামনে চলে আসে। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশের অভ্যন্তরীণ খাদ্য সংকটের যে বিষয় রয়েছে তা তারা প্রচার করেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রচার না করলেও আমরা জানি অনেক উন্নত দেশে ব্যাপকভাবে খাদ্যের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। এমনকি যারা সারাবিম্বে মোড়লগিরি করে বেড়ায় তাদেরও অনেক মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে। কিন্তু সেদিক থেকে বিবেচনা করলেও করোনা মোকাবিলা করেও বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা আমরা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি।
এজন্য তার সহকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের দিন-রাত পরিশ্রমের উল্লেখ করে তাদের তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি অকুন্ঠ সমর্থনের জন্য তিনি তার দলসহ সব সহযোগী সংগঠন ও দেশবাসীকেও কৃতজ্ঞতা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি লোকরা যেমন করেছে তেমনি আমার দলের লোকরাও আন্তরিকতা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ও সহযোগিতা করেছে।
তিনি ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমাদের দেশের আনাচেকানাচে অনেক মানুষ ছড়িয়ে আছে যারা মানুষের সেবা করেন নিজেদের উদ্যোগে। সেই ধরনের মানুষগুলোকেও আমাদের খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদেরকেও পুরস্কৃত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন এমন অনেকেই রয়েছেন তারা কখনো প্রচারে আসেন না। তারা দৃষ্টিসীমার বাইরেই থাকেন। কিন্তু তাদেরকে খুঁজে বের করে আমাদের পুরস্কৃত করা উচিত এ কারণে যে, তাদের দেখে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম এবং অন্যরা শিক্ষা লাভ করতে পারে।
তিনিবলেন, মানুষের সেবার ও কল্যাণের মধ্য দিয়ে যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় হাজার ধনসম্পদ বানালেও সেটা হয় না। কাজেই সেভাবেই আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি করোনাকালীন অবস্থার উত্তরণে সশরীওে স্বাধীনতা পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারায় নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান ও সম্মানিত বোধ করছেন বলেও জানান।
শেখ হাসিনা মঞ্চ থেকে নেমে এসে জীবিত দুই মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুদ্দীন আহমেদ ও আব্দুল জলিলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh