করোনা আক্রান্তদের আইসোলেশনের মেয়াদ কমানোর সুপারিশ

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর আইসোলেশনে থাকার সময় আগের তুলনায় চারদিন কমিয়ে ১০ দিন করার সুপারিশ করেছে সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি।

গতকাল বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে এক বৈঠকের পর কোভিড-১৯ সর্ম্পকিত জাতীয় পরামর্শক কমিটি মোট পাঁচটি সুপারিশ করেছে। কমিটির এক নম্বর সুপারিশেই আইসোলেশনের মেয়াদ চারদিন কমানোর কথা বলা হয়।

দেশে বর্তমানে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর লক্ষণ প্রকাশের পর ১৪ দিন পর্যন্ত আইসোলেশনের নিয়ম রয়েছে। এখন কারিগরি পরামর্শক কমিটি এই আইসোলেশনের সময় ১০ দিন করার সুপারিশ করলো।

কমিটির সুপারিশে বলা হয়, কোভিড-১৯ নিশ্চিত হয়েছে এমন রোগীর সংস্পর্শে যারা গেছেন, তাদের কোনও উপসর্গ না থাকলে কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন নেই। তবে রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির টাইট মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে সাধারণ জনগণের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে সরকারকে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণের প্রস্তাব করেছে জাতীয় কারিগরি কমিটি।

অন্যদেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের বন্দরগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশও করেছে কমিটি। বিমানবন্দরসহ সব বন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে সরকারি স্বাস্থ্য নির্দেশনা যথাযথভাবে যেন পালন করা হয়, সেজন্য নজরদারি বাড়াতে হবে।

সব সরকারি হাসপাতালে সার্বক্ষণিক কোভিড-১৯ এবং নন-কোভিড সব ধরণের রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়।

এছাড়া মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে পরিবহন মালিক সমিতি, দোকান ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিসহ সব পক্ষকে সম্পৃক্ত করার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।

দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের হার এখন ২৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহ যাবত এই হার বেশ দ্রুতগতিতে বাড়ছে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা করোনা মহামারিতে দেশে এর আগে কম সময়ে এত দ্রুত রোগী বাড়তে দেখা যায়নি। মাত্র ৯ দিনের ব্যবধানে দেশে দৈনিক করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ থেকে সাড়ে ৯ হাজারে পৌঁছেছে। 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন, দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ মাত্র শুরু হয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ শনাক্তের হার ২৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে বুধবার শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ১১ শতাংশে। গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৯ হাজার ৫০০ জনের। আর মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের।

আর আগের সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে নতুন রোগী বেড়েছে ২২৮ শতাংশ। এসময় মৃত্যু বেড়েছে ১৮৫ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে এখন দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে। এমন দ্রুত সংক্রমণ আগে দেখা যায়নি। হাসপাতালে যারা ভর্তি হচ্ছেন, তারা করোনার ডেল্টা ধরনে বেশি আক্রান্ত। এর মানে হচ্ছে ওমিক্রনের পাশাপাশি ডেল্টা ধরনও সক্রিয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //