পুরুষ ধর্ষণ বিচারে আইনের ‘ফাঁক’

বয়স পঁয়ত্রিশের যুবক নাছির উদ্দিন। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার একটি কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক। পাশাপাশি হোস্টেল ইনচার্জ। গা শিউরে ওঠার মতো কর্মকাণ্ড ‘নিষ্ঠাবান’ এই শিক্ষকের। বিশৃঙ্খলা তার একদমই পছন্দ না! ওস্তাদের খেদমতে কবে কখন কোন ছাত্র হাজির হবে- সব একবারে রুটিন করে দিতেন। এর বাইরে গেলেই কারণে-অকারণে চলত বেধড়ক মারধর। 

যেহেতু মাদ্রাসার বেশিরভাগ শিশুই এতিম ও দরিদ্র পরিবার থেকে আসা। তাই শেষ পর্যন্ত তার পক্ষে হুজুরের প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ’ বলা ভিন্ন কোনো উপায় থাকত না। এ যেন ছোটবেলায় পড়া গল্পের অত্যাচারী সিংহ, যে কিনা বনের পশুদের সঙ্গে চুক্তি করে বলেছিল- প্রতিদিন একটি করে পশু খাবার হিসেবে পাঠালে আমি আর যার-তার ওপর অত্যাচার করব না। তবে সিংহের মতোই সেই মাদ্রাসা শিক্ষকেরও শেষ রক্ষা হয়নি। 

সব ঘটনার দায় স্বীকার করে নাছির উদ্দিন তার জবানবন্দিতে বলেছিলেন- ‘স্যার, ওরা তো খুব ছোট। তাই আমি সবসময় চেষ্টা করি, যেন ওরা বেশি ব্যথা না পায়। আমি তো ওদের শিক্ষক, ওরা ব্যথা পেয়ে কান্নাকাটি করলে আমার খুব কষ্ট লাগে!’

‘আমার তখন তিন কি চার বছর বয়স। আমরা তখন রাজধানীর ভ্যাকসিনটুলিতে থাকতাম। আমাদের বাসায় গ্রাম থেকে আসা একটা লোক ছিল। ওই লোকটি একদিন আমাকে তার গোপনাঙ্গ নিয়ে খেলাচ্ছিল। আমার তখন যে বয়স, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আমার কোনো আবেগ, অভিজ্ঞতা বা কষ্ট কিছুই হচ্ছিল না, আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আমার ভাগ্য ভালো। এরকম অবস্থায় আমার মা ব্যাপারটা দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কী ঘটনা ঘটছে। ওই লোকটা ছিল বয়স্ক। মা তখন এসে আমাকে নিয়ে যান এবং গোসল করান। আমার মাকে আমি জিজ্ঞেস করছিলাম- আমি কি খারাপ কিছু করেছি? সন্ধ্যাবেলায় তো মানুষকে আর গোসল করায় না কেউ। আমার মা কোনো উত্তরই দিচ্ছিলেন না। কেবল বলছিলেন- ঠিক আছে, ঠিক আছে। পরে আমার বাবা ওই লোকটাকে কান ধরে ওঠবস করিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন।’ শৈশবের স্মৃতি হাতড়ে কথাগুলো বলছিলেন লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী।

ঘটনা দুটি সমাজের খণ্ডচিত্র কেবল। নিয়মিত এরকম অগণিত শিশুকেই বয়োজ্যেষ্ঠ কিংবা শিক্ষকদের লালসার শিকার হতে হয়। আরও গভীরে গেলে হয়তো অনেক বেশিই তথ্য মিলবে। ২০১৭ সালে দেশে ১৪টি ছেলে শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল বলে ১০টি সংবাদমাধ্যমের খবর পর্যবেক্ষণ করে তথ্য দিয়েছিল শিশু অধিকার ফোরাম। আর তিন বছর পর ২০২০ সালে কেবল সংবাদ মাধ্যমেই প্রকাশ হয়েছে এমন শতাধিক ঘটনা। যদিও শিশু অধিকার সংগঠনগুলো মনে করে বাস্তবে এর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। 

গেল নভেম্বরেই বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৪০ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। এর মধ্যে মারা গেছে তিনজন, লোকলজ্জায় আত্মহত্যা করে এক শিক্ষার্থী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে একাধিক সংগঠন। অথচ ছেলে শিশুদের যৌন নির্যাতনের বিষয়টি সমাজে বা দেশের আইনে একেবারেই গুরুত্ব পাচ্ছে না। উল্টো মানসম্মানের ভয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনা চেপে যাওয়ার প্রবণতাই বেশি। এ সুযোগে অপরাধীরা পার পেয়ে জন্ম দিচ্ছে নতুন ঘটনার। তাই প্রতি বছর জ্যামিতিক হারে বাড়ছে এমন ঘৃণ্য অপরাধ।

লড়াইটা কেবল একার
সম্প্রতি জনদাবির মুখে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড’ হলেও বলাৎকারের বিষয়টি এখনো উপেক্ষিত। অথচ নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির ওপর সেই বিকৃত রুচির প্রভাব গুরুতর, যা শুধু শারীরিকই নয় বরং মানসিকও। বলাৎকারের শিকার হয়ে মৃত্যুর পাশপাশি অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যাকেও বেছে নেয় কেউ কেউ। আর যারা বেঁচে থাকে, তাদের ট্রমা বইতে হয় সারাজীবন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভয়ভীতি দেখিয়ে বা কখনো লোকলজ্জার ভয়ে বা আপসে চাপা পড়ে বলাৎকারের মতো বীভৎস অপরাধ। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ বা বিচারের দাবিতে আন্দোলনও তেমন চোখে পড়ে না। 

অনেক দিন ধরেই পুরুষদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন শেখ খায়রুল আলম। নির্যাতিতদের আইনি ও মানসিক সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘বাংলাদেশ পুরুষ অধিকার ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠন। নিজেকেও একজন ‘ভুক্তভোগী’ দাবি করে শেখ খায়রুল বলেন, ‘দেশের আইন-কানুন, বিচার-ব্যবস্থা থেকে সবকিছু কার্যত পুরুষদের বিপক্ষে। পুরুষরা সব সময়ই বৈষম্যের শিকার, ন্যায়বিচার থেকেও বঞ্চিত। পুরুষদের পক্ষে কথা বলার কেউ নেই।’ আইনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমাদের ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে যৌন সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ত যতগুলো ধারা আছে, প্রত্যেকটিতে পরিষ্কার বলা রয়েছে- যখন একজন পুরুষ একজন নারীর বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতামূলক আচরণ করেন...। অর্থাৎ ধরেই নেওয়া হয়েছে যে, একজন পুরুষ নিজে যৌন আক্রমণের শিকার হতে পারেন না।’ পুরুষ অধিকার ফাউন্ডেশনের এই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বলেন, ‘এমন অনেক ঘটনা পাচ্ছি যেখানে পুরুষরা নির্যাতিত হয়েও লজ্জায় বা ভয়ে কাউকে বলতে পারছেন না। লোক হাসাহাসির ভয়ও কাজ করে তাদের মধ্যে। বর্তমানে অনেক পুরুষ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। নানা বিষয়ে বুদ্ধি-পরামর্শ চাইছেন।’

সাদা মনে কালো দাগ
শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দেশের বেশকিছু স্কুল ও মাদ্রাসাশিক্ষক সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন। এ পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়িয়েছে অভিভাবকদের মাঝে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কতটা নিরাপদ তাদের শিশু-কিশোররা! যদিও এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন বলে মনে করছেন শিক্ষা পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্তরা। তবে সমস্যাটাকে এড়িয়ে না গিয়ে যৌন নিপীড়ন বন্ধে করণীয় ঠিক করতে আলোচনা চলছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলছেন, মাদ্রাসাকে ঘিরে যেসব অভিযোগ উঠছে, এই পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গুরুত্বের সঙ্গেই আলোচনা করছি। এগুলোর সমাধান কীভাবে করা যায়, সেজন্য আমাদের উদ্যোগ, চিন্তা ও পরিকল্পনা রয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘সাদা কাপড়ে দাগ লাগলে, এটি ছোট হলেও খুব স্পষ্ট দেখা যায়। তো যদিও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার কথা আসছে; কিন্তু এ নিয়ে আমরা অত্যন্ত চিন্তিত। আমাদের বোর্ডের মুরব্বি যারা আছেন, তাদের সঙ্গে করণীয় নিয়ে আলোচনা করছি। তারা কিছু পদক্ষেপও নিচ্ছেন। আমরা তাদের সংশোধন এবং সতর্কীকরণের মাধ্যমে এর সুরাহা করতে চাই। তবে অনেক ঘটনাই যেসব মাদ্রাসায় ঘটেছে তারা মূলত আমাদের আওতাভুক্ত নয়।’

মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে গবেষণা করা আফসান চৌধুরী বলেন, ‘আবাসিক মাদ্রাসা থেকেই শিশু শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন এবং যৌন নিপীড়নের অভিযোগ বেশি আসে। কেননা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশুরা সেখানে একেবারেই অনিরাপদ, বিশেষ করে সেখানে যদি বয়স্ক লোক থাকে। তাছাড়া এ ধরনের ঘটনা ঘটলে শিশুরা তা বলতে বা অন্য কাউকে জানাতে ভয় পায় এবং অনেক সময় বিষয়টা বুঝতেও পারে না।’ তবে শুধু মাদ্রাসাতেই নয়, ২০০২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন আর্চডায়োসিজে (খ্রিস্টীয় প্রধান ধর্মযাজকের এলাকা) ২৪৯ যাজক যৌন নিপীড়নের দায়ে প্রকাশ্যে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। চাপা পড়ে থাকা এসব নির্যাতনের তথ্য বেরিয়ে এসেছিল দেশটির বোস্টন গ্লোব পত্রিকার স্পটলাইট টিমের অনুসন্ধানে। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উদ্ঘাটিত হয়।

আইন কী বলে?
আইনে নারী ধর্ষণের সংজ্ঞা দেওয়া থাকলেও পুরুষ ধর্ষণের সুস্পষ্ট কোনো আইন ও সংজ্ঞা নেই। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা ৯(১)-এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- যদি কোনো পুরুষ বিবাহবহির্ভূত ১৬ বছরের অধিক বয়সের নারীর সঙ্গে সম্মতি ছাড়া কিংবা ভীতি দেখিয়ে বা প্রতারণামূলকভাবে সম্মতি আদায়ে যৌন সঙ্গম করে, তাহলে তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবে। আর ১৬ বছরের নিচের কোনো নারীর সঙ্গে তার অসম্মতি বা সম্মতিতেও যৌনসঙ্গম করলে সেটিও ধর্ষণ। তবে এই আইনের ধারা ২(ট) সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘শিশু’ অর্থ অনধিক ১৬ বছরের কোনো ব্যক্তি। সেখানে অবশ্য শিশুদের কোনো লিঙ্গ ভাগ করা হয়নি; কিন্তু ধর্ষণের যে সংজ্ঞা আছে দ-বিধির ৩৭৫ ধরায়, তাতে ধর্ষণের শিকার কেবল যে কোনো বয়সী নারীই হতে পারেন। অর্থাৎ স্পষ্টতই পুরুষ একই ধরনের নির্যাতনের শিকার হলেও ধর্ষণ আইনে বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। 

দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় অবশ্য অস্বাভাবিক অপরাধের কথা বলা হয়েছে। সেই ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরে সহবাস অপরাধ হিসেবেই গণ্য। এখানে স্বেচ্ছায় বা জোর করে কোনো পুরুষ, নারী বা জন্তুর সঙ্গে প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরে যৌন সম্পর্কের অপরাধের সর্বনিম্ন ১০ এবং সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধান। ফলে ছেলে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দণ্ডবিধির এ ধারাতেই মামলা করার একটি প্রবণতা ছিল। কিন্তু পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সম্প্রতি এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ছেলে কিংবা মেয়ে, ১৬ বছরের নিচে কোনো শিশু ধর্ষণ বা বলাৎকারের শিকার হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা করতে হবে। চট্টগ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক সেই নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধেও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় মামলা হয়েছে। 

এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘১৬ বছর পর্যন্ত যে কোনো শিশু ধর্ষণের শিকার হলে ধর্ষণ মামলা হবে; কিন্তু নির্যাতিত কোনো ছেলের বয়স ১৬ বছরের বেশি হলে তখন আর ধর্ষণ মামলার সুযোগ নেই।’ এ ক্ষেত্রে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী রহমান জাহিদ মনে করেন, ‘ধর্ষণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা দরকার। কেননা নারী-পুরুষ উভয়ই ধর্ষণের শিকার হতে পারেন।’

এমন পরিস্থিতিতে পুরুষ ও অন্যান্য ধর্ষণকে নারী ধর্ষণের মতোই অপরাধ হিসেবে যুক্ত করতে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সংশোধন চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়া নূহাইয়া আহমেদ, সমাজকর্মী মাসুম বিল্লাহ ও সৌমেন ভৌমিক। তাদের আইনজীবী তাপস কান্তি বল জানান, সম্প্রতি মেয়েদের পাশাপাশি ছেলে শিশু তথা পুরুষকেও যৌন নির্যাতন ও বলাৎকারের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কিন্তু এ ধরনের নির্যাতনকে ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে বিচার করা যাচ্ছে না। সে কারণে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সংশোধন এনে ‘নারী ধর্ষণ’-এর পাশাপাশি অপরাধ হিসেবে ‘পুরুষ ধর্ষণ’ বিষয়টিকে যুক্ত করার আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়- ৩৭৫ ধারায় কেবল পুরুষদের মাধ্যমে নারী ধর্ষণের বিষয়ে বলা আছে। এখানে সম্মতি ছাড়া নারীদের দ্বারা নারী, নারীর দ্বারা পুরুষ, পুরুষ দ্বারা পুরুষ এবং একজন ট্রান্সজেন্ডার আরেক ট্রান্সজেন্ডারের দ্বারা যৌন নিপীড়নের বিষয়টি নেই।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মশিউর রহমান বলেন, ‘১৬ বছরের বেশি কোনো ছেলে ধর্ষণের শিকার হলে দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় অস্বাভাবিক অপরাধের মামলা হয়। এ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবনের কথা বলা হয়েছে। অথচ একই অপরাধ কোনো নারী বা শিশুর সঙ্গে হলে তখন ধর্ষণের মামলা হয়, যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তাই সহজভাবে বলতে গেলে দেশে ১৬ বছরের বেশি বয়সী কোনো পুরুষের সঙ্গে যৌন সহিংসতা হলেও ধর্ষণের অভিযোগে আইনগতভাবে সুবিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ তবে এ ক্ষেত্রে দণ্ডবিধিতে ধর্ষণের সংজ্ঞায় নারীর সঙ্গে ‘পুরুষ’ শব্দটি যুক্ত করে দিলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যায় বলে মনে করেন এই আইনজীবী।

এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আইনের ফাঁক-ফোকরের পাশাপাশি ছেলে ধর্ষণের বিষয়ে সাধারণ মানুষ, এমনকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও বিচক্ষণতা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। ধর্ষণের ক্ষেত্রে কী কী আলামত সংগ্রহ করতে হবে, সেগুলো কীভাবে সংরক্ষণ করতে হবে- সে বিষয়ে খুব কম পুলিশ সদস্যেরই জ্ঞান আছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা নিয়ে। কেননা নারীদের বিষয়ে এ ব্যাপারে গাইডলাইন থাকলেও পুরুষের ক্ষেত্রে তেমনটি নেই। আইনের পাশাপাশি এসব কারণেও ভুক্তভোগীর বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //