বন্যায় ৪০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

তিন দফায় দেশের ৩১টি জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে এবং দফায়-দফায় বন্যায় এসব জেলার ১৪৭টি উপজেলার মোট ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ পরিবারের ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

এ পর্যন্ত  ১ হাজার ৫শ’ ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮৮ হাজার ৬২ জন আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যাদুর্গতের জন্য সরকারি ত্রাণ-সহায়তা হিসেবে এ পর্যন্ত নগদ ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান আজ শনিবার (২৫ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছেন। সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মোহাম্মদ মোহসীন এসময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, খাদ্য-সহায়তা হিসেবে দেয়া হয়েছে ১২ হাজার ১০ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ২১ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট। এর পাশাপাশি বন্যা-কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাণি-সম্পদ বাঁচাতে গো-খাদ্য ক্রয়ের জন্য নগদ ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ও শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য আরো নগদ ৭০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। 

নদ-নদীর পানির তোড়ে বন্যা-কবলিত কতিপয় স্থানে ঘরবাড়ি ভেঙে নদীতে ভেসে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব এলাকায় ঘর নির্মাণের জন্যও এ পর্যন্ত ৩শ’ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহমঞ্জুরি বাবদ নগদ ৯ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, উজানে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত ২৬ জুন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা শুরু হয়। চলতি জুলাই মাসের প্রথম-সপ্তাহের শেষ দিকে পানি কমতে শুরু করলে ১১ জুলাই থেকে পুনরায় নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় দেখা দেয়, দ্বিতীয় দফা বন্যা। ২১ জুলাই থেকে তৃতীয় দফা পানি বাড়তে শুরু করেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. এনামুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন বলেন, চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যায় দেশের ১৬ জেলায় আরো দুইদিন পানি বাড়তে পারে। তবে সাগরে জোয়ারের কারণে দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যার পানি কমতে কিছুটা দেরি হতে পারে। আর জোয়ারের সমস্যা না হলে, আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দেশের সব জায়গা থেকে বন্যার পানি নেমে যেতে পারে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্যায় ত্রাণ সহায়তা তদারকি করতে ছয়টি কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটি উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ত্রাণ কার্যক্রমের দেখভাল করবে। আগামী ২১ দিন কমিটিগুলো এ দায়িত্ব পালন করবে। কমিটি মাঠ-পর্যায়ে বন্যা-কবলিত মানুষের জন্য যা প্রয়োজন, তা জনালে সরকার প্রয়োজন-অনুযায়ী বরাদ্দ দেবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ৩৩৩ হেল্পলাইনের সাথে সকল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। কোথাও কেউ খাবারের কষ্টে থাকলে ৩৩৩ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ত্রাণ-সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //