সাংবাদিককে মধ্যরাতে তুলে এনে দণ্ডিত করার ঘটনা বেআইনি: টিআইবি

মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে তুলে নিয়ে মোবাইল কোর্টে বিচার করে কারাদণ্ড দেয়ার পুরো ঘটনাকেই বেআইনি বলে আখ্যায়িত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

আজ শনিবার (১৪ মার্চ) এক বিবৃতিতে জড়িতদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, আইনের এমন যথেচ্ছ অপপ্রয়োগ আইনের শাসনের সাংবিধানিক অঙ্গীকারের পরিপন্থী ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর নামান্তর। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় দ্রুত তদন্ত ও জড়িতদের বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে প্রশাসন তথা সরকারের ওপরই জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। সে অনুযায়ী রাতের বেলা কোনো নাগরিককে ঘর থেকে তুলে এনে মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনা করাটা অবৈধ।

তিনি বলেন, যে সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে, তিনি যদি সন্দেহের তালিকায় থাকতেন, তাহলে তাকে নজরদারিতে রাখা যেতো কিংবা ‘অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায়’ পুলিশ অভিযান চালাতে পারতো। আরো গুরুতর মনে হলে ম্যাজিস্ট্রেট তার বাসা সিলগালা করে দিয়ে আসতে পারতেন। 

তিনি আরো বলেন, কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মধ্যরাতে ‘দরজা ভেঙে’ একজন নাগরিককে তুলে আনা ও পরে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে কারাদণ্ড দেয়াটা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা যতটুকু বুঝি, তাতে মোবাইল কোর্টের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা, কিন্তু তা না করে ওই সাংবাদিককে তুলে আনার পর কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনা থেকে পুরো ঘটনাটির পেছনেই যে অপরাধ দমন নয় বরং অন্য কোনও বিবেচনা কাজ করেছে তা স্পষ্ট।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এরইমধ্যে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিকের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন যে তার স্বামীকে ‘আটক করার পর নগ্ন করে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে’। এই অভিযোগের সত্যতা থাকলে, তা কেবল আইনের অপব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং যে বা যারা এই ঘটনায় জড়িত, তারা সরাসরি ফৌজদারি অপরাধ করেছে। 

তিনি বলেন, সুতরাং আমরা দাবি করছি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় গঠিত তদন্ত কমিটি দ্রুত একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য প্রতিবেদন দেবেন ও এমন জবাবদিহিমূলক পদক্ষেপ গৃহীত হবে যার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে না।

ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত এই অভিযোগের সুরাহা করে, দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগতব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।

আরো পড়ুন:

মধ্যরাতে সাংবাদিককে তুলে নিয়ে জেল-জরিমানা

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //