সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে প্রধান করে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানী বিআরটিএ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে প্রধান করে ট্রান্সফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু উদ্যোগ নিলেই হবে না, বাস্তবায়ন করতে হবে। মহাসড়কে চালকের জন্য বিশ্রামাগার তৈরির প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। এছাড়া বহুল প্রতিক্ষীত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করতে এডিবি অর্থ দেবে।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আলাদা সার্ভিস লেন তৈরি করতে প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ অন্য মহাসড়ক যেহেতু চার লেন নয়, তাই চার লেন করার সময় সার্ভিস লেনের পরিকল্পনা করেই তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারব না, একথা ঠিক নয়। আমরা ইতোমধ্যে বহু ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও আইন বাস্তবায়ন করেছি। তাই আমরা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাবই।
ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্ট কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে সড়ক পরিবহন আইন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে সবাইকে জানানো হবে।
পুলিশের আইজি জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডাম্পিং স্টেশন নেই। গাড়ি জব্দ করে রাখারই জায়গা নেই। এটা নির্মাণ করলে নিয়ম না মানা গাড়িকে জব্দ করা গেলে বিশৃঙ্খলা কমে আসবে।
ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আইন না মানার সংস্কৃতির কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলা। ফলে সেবা সংস্থার পরিবর্তে ডিএমপি রাজস্ব আদায়ের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা চাই না ডিএমপি রাজস্ব আদায়ের প্রতিষ্ঠান হোক।
পুলিশের আইজিপি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব, ডিএমপি কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী, বিআরটিএ ও বিআরটিসির চেয়ারম্যান, ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক, পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধি, পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিনিধি, ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধি, প্রাইম মুভারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি ও হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি টাস্কফোর্সের সদস্য হবেন।
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক, কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন ও ব্র্যাকের প্রতিনিধিকেও সদস্য রাখা হয়েছে।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন, সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান, পরিবহন মালিক নেতা ও সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা, পুলিশের আইজি জাবেদ পাটোয়ারী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম, রেল সচিব মোফাজ্জেল হোসেন, বিআরটিএ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ প্রমুখ অংশ নেন।